মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথিত উপদেষ্টাকাণ্ডে ফেঁসে যাওয়া অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান সারওয়ার্দীর সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
যুক্তরাষ্ট্রসহ সাত দেশে তার সম্পদের খোঁজে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি। দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হাসান সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধে ২০২০ সালে ৩১ পাতার একটি অভিযোগ দুদকে জমা হয়। তাতে আনসার ভিডিপির মহাপরিচালক থাকাকালে তিনি বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তা বিদেশে পাচার করেন বলে উল্লেখ ছিল।
অভিযোগ পাওয়ার পর ওই বছরই অভিযোগ অনুসন্ধানে দল গঠন করে কমিশন। এরপর হাসান সারওয়ার্দীকে দুদকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়া ওই অনুসন্ধানে আর কোনো অগ্রগতি ছিল না।
সম্প্রতি নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে আলোচিত-সমালোচিত হন সাবেক প্রভাবশালী এই সেনা কর্মকর্তা। সবশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা সাজিয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক মিয়ান আরেফিকে নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।
এরপর এ ঘটনায় দায়ের করা প্রতারণার মামলায় তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরপরই নড়েচড়ে বসেছে দুদক।
সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ সাতটি দেশে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের খোঁজে চিঠি দিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে সম্পদ ও যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ব্যাংক হিসাব ও এফডিআর সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব ও সম্পদের উৎস সম্পর্কেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘২০২০ সালে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে হাসান সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। অনুসন্ধানে লন্ডনে তার বাড়ি, ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেছে। আরও কয়েকটি দেশে তার সম্পদ আছে বলে তথ্য মিলেছে। এসব তথ্য নিশ্চিত হতে বিএফআইইউর মাধ্যমে সাতটি দেশে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে ওই চিঠির জবাব আসার আগে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না।’
জানা গেছে, নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি থাকাকালে রানা প্লাজা ধসের পর উদ্ধার কাজে নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসেন হাসান সারওয়ার্দী। এরপর তিনি আর্টডকের জিওসি ও ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে তিনি আনসার ও ভিডিপি এবং এসএসএফের মহাপরিচালক এবং সেনা গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।