কোনো অপরাধ করিনি, শঙ্কিত হব কেন: ড. ইউনূস
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৪৮ পিএম
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যালয় থেকে বেরিয়ে এসে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমি কোনো অপরাধ করিনি। শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
দুদকের তলবে সাড়া দিয়ে অর্থ পাচারের মামলায় বক্তব্য জানাতে বৃহস্পতিবার সংস্থাটির কার্যালয়ে গিয়েছিলেন ড. ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের আরও দুই কর্মকর্তা।
ওই দুই কর্মকর্তা হলেন—গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম।
সেখান থেকে বের হওয়ার পর গণমাধ্যম কর্মীরা ঘিরে ধরেন প্রফেসর ইউনূসকে।
আপনি শঙ্কিত গণমাধ্যমকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, 'কেন শঙ্কিত হব? আমি অপরাধ করিনি, শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাকে ডেকেছে, সে জন্য আমি এসেছি।'
তিনি আরও বলেন, যেহেতু এটা আইনি বিষয়। আমার আইনজীবী বুঝিয়ে বলবেন।
পরে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, দুদকের উনার বিরুদ্ধে অভিযোগটি হচ্ছে, গ্রামীণ টেলিকমের ১০৬ জন কর্মচারী শ্রম আদালতে মামলা করেছিলেন কেন তাদের নিট মুনাফার পাঁচ শতাংশ দেওয়া হবে না? ট্রেড ইউনিয়নও মামলা করেছিল। ট্রেড ইউনিয়ন শ্রম আদালতের মামলাটি গোপন করে উচ্চ আদালতে এসে একটি মামলা করে।
প্রফেসর ইউনূসের আইনজীবী বলেন, আমাদের বক্তব্য ছিল, গ্রামীণ টেলিকম সামাজিক ব্যবসার একটি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে শিল্প কলকারখানা গড়ে তুলে বেকারত্ব দূর করা এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করাই মূল লক্ষ্য। তাতে বলা আছে, কেউ কোনো মুনাফা নেবে না। এই মুনাফায় সমাজের উন্নয়নের জন্য একটার পর একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে।
আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, কোম্পানি আইনের ২৮ ধারায় বলা আছে, সমাজের জন্য যে সংগঠন কাজ করবে, তার মুনাফা দেওয়া নিষিদ্ধ। গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানি আইনের ২৮ ধারায় সৃষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান; মুনাফা দেওয়া নিষিদ্ধ। শ্রম আইনে কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত না। শ্রম আদালতের দায়িত্ব এই কোম্পানিতে যে শ্রমিকরা কাজ করবে তাদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা দেখভাল করা।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান চিঠি দিয়ে ড. ইউনূসসহ তিন জনকে ৫ অক্টোবর হাজির হতে বলেন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান চিঠি দিয়ে ড. ইউনূসসহ তিন জনকে ৫ অক্টোবর হাজির হতে বলেন।
এর আগে গত ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ড. ইউনূস। এ কারণেই যথা সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তলবে হাজির হয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩৮ মিনিটে দুদকে হাজির হন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত আছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ ও অ্যাডভোকেট মিজানূর রহমান।