বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে যে বার্তা দিল ওয়াচডগ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:৫০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ওয়াচডগ গ্রুপ 'সিভিকাস মনিটর' বাংলাদেশকে নিজেদের 'ওয়াচলিস্ট' তালিকায় যুক্ত করেছে। বাংলাদেশ ছাড়াও সর্বশেষ (২১ সেপ্টেম্বর) হালনাগাদ করা ওই তালিকায় রয়েছে— বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, ইকুয়েডর, সেনেগাল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।
সিভিকাস মনিটরের মতে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচনের আগে— বাংলাদেশে বিরোধী দল, নেতাকর্মী এবং ভিন্নমতের কণ্ঠস্বরের ওপর ক্রমবর্ধমানভাবে ক্র্যাকডাউন চালানো হয়েছে।
২০২৩ সালের শুরু থেকে, কর্তৃপক্ষ বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) তাদের লক্ষ্যবস্তু করার মাত্রা বাড়িয়েছে। দলটির সমর্থকদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার বানোয়াট মামলা করা হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী (সংস্থাসমূহের) কর্মকর্তারা এ উন্মুক্ত মামলাগুলোকে রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্যদের বাড়িতে অভিযান চালানোর জন্য 'ওয়ারেন্ট' হিসেবে ব্যবহার করেছেন, যা কিনা প্রকাশ্যে রাজনৈতিক হয়রানি এবং ভয় দেখানো বলেই মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: তড়িঘড়ি করে ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন’ পাশ হলে সুফল মিলবে না
তদুপরি, বিরোধীদের বিক্ষোভগুলোতে টিয়ার গ্যাস এবং সত্যিকারের গোলাবারুদের ব্যবহার সহবিধিনিষেধ এবং অত্যধিক বল প্রয়োগ করা হয়েছে।
সিভিকাস মনিটর বলছে, সরকার মানবাধিকারকর্মীদের হয়রানি করার মাত্রাও বাড়িয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের আদিলুর রহমান খান এবং এএসএম নাসিরুদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ শুনানি ত্বরান্বিত করেছে এবং তাদের দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। ২০১৩ সালের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদনের জন্য তারা ১০ বছরের বিচারিক হয়রানির সম্মুখীন হয়েছেন। নিজেদের কাজের জন্য তাদের বিরুদ্ধে দুর্নামও রটানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ সেন্সরশিপ এবং সাংবাদিকদের নির্বিচারে আটক ও আইনি হয়রানির মাধ্যমে মিডিয়াকে নীরব করার চেষ্টা করেছে। সমালোচনা করে এমন মিডিয়া আউটলেটগুলো বন্ধ করা হয়েছে, নিন্দিত করা হয়েছে এবং তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে।
নির্বাসিত সাংবাদিক এবং তাদের পরিবারকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। সাংবাদিক হত্যা এবং অপহরণের ক্ষেত্রেও দায়মুক্তি রয়েছে।
ড্রাকোনিয়ান ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ)— এমন একটি আইন যা কর্তৃপক্ষকে অনলাইন স্পেস নজরদারি করতে ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করে। এটি প্রায়শই অনলাইন সমালোচক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হচ্ছে, যা ডিএসএর বেশিরভাগ দমনমূলক অপরাধই ধরে রেখেছে।
দেশে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে কাজ করছে সরকার। এ ক্ষেত্রে তারা রাজনৈতিক আন্দোলন দমন করতে এবং ভিন্নমতের কণ্ঠস্বরকে নীরব করতে বলপূর্বক গুম করাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে।
প্রসঙ্গত, ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক খ্যাতনামা ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন অনুযায়ী— সিভিকাস মনিটর, একটি অনলাইন প্ল্যাটফরম যা বিশ্বজুড়ে নাগরিক স্বাধীনতার সর্বশেষ গতিপ্রকৃতি ট্র্যাক করে।