স্ত্রী হত্যায় মৃত্যুদণ্ড কমে স্বামীর যাবজ্জীবন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৩ পিএম
দাম্পত্য কলহের জেরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে চন্দনা হত্যা মামলায় তার স্বামীকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ পরিমার্জন করে যাবজ্জীবনের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রাজশাহীতে গৃহবধূ শারমিন আক্তার লিপি হত্যা মামলায় স্বামী রফিকুল ইসলামকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ পরিমার্জন করে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য আসা ডেথ রেফারেন্স ও আসামির আপিল খারিজ এবং দণ্ড পরিমার্জন করে সোমবার এ পৃথক রায় দেন বিচারপতি এসএম এমদাদুল হক ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ।
চন্দনা হত্যা মামলায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহাম্মেদ হিরো, আবু নাসের স্বপন ও মির্জা মোহাম্মদ শোয়েব মুহিত। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী নারগিস আক্তার।
২০১০ সালের ২২ এপ্রিল চন্দনার সঙ্গে সাজুর বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্যজীবনে বনিবনা না হওয়ায় ওই বছরের ২ আগস্ট সাজুকে তালাক দেন চন্দনা; কিন্তু পারিবারিকভাবে মীমাংসা হলে ওই বছরের ২৮ অক্টোবর চন্দনা ও সাজুর পুনরায় বিয়ে দেওয়া হয়।
২০১২ সালে চন্দনা মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়তেন। তিনি কলেজের ছাত্রী নিবাসে থাকতেন। আসামি সাজু পরিকল্পনা মোতাবেক ঢাকায় আসেন এবং ওই বছর মে মাসে ১ তারিখে আদাবরের শেখেরটেক রোডে একটি বাসায় সাবলেট নেন।
ওই বছরের ১৪ মে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই দম্পতির ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সাজু ঘরে থাকা কাঁচি (সিজার) দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করেন চন্দনাকে। এতে চন্দনার মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের ১৫ দিন পর গ্রেফতার হয় সাজু।
এ মামলায় ২০১৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। পরে বিধান অনুসারে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হলে আসামি আপিল করেন।
বাগমারার লিপি হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড কমে যাবজ্জীবন: ২০০৭ সালে রাজশাহীতে গৃহবধূ শারমিন আক্তার লিপি হত্যা মামলায় স্বামী রফিকুল ইসলামকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ পরিমার্জন করে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি এসএম এমদাদুল হক ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহাম্মেদ হিরো, আবু নাসের স্বপন ও মির্জা মোহাম্মদ শোয়েব মুহিত। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির, মোহাম্মদ নওয়াব আলী ও জিএম মুজাহিদুর রহমান।
জানা গেছে, বাগমারার ভবানীগঞ্জে রফিকুল ইসলাম যৌতুকের দাবিতে তার স্ত্রী শারমিন আক্তার লিপির ওপর বিয়ের পর থেকেই নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন।
২০০৭ সালের ৭ আগস্ট রাতে নির্যাতনের একপর্যায়ে তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়। তবে ঘটনা ধামাচাপা দিতে শারমিন আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার করা হয়; কিন্তু পুলিশ বিভিন্ন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে রফিকুলকে গ্রেফতার করে। পরে বাগমারা থানায় হত্যা মামলা করা হয়।
এ মামলায় ২০১৬ সালের ৪ অক্টোবর রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক কেএম শহীদ আহমেদ রফিকুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।