তার বিরুদ্ধে আপাতত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছি না: আইনমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:১৫ পিএম
নিরাপত্তা শঙ্কায় থাকার কথা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কিংবা পুলিশকে জানাননি বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। শনিবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানিয়ে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে অভিযোগ করার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা- জানতে চাওয়া হয় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে।
শনিবার তিনি যুগান্তরকে জানান, তাকে আইন মোতাবেক বরখাস্ত করা হয়েছে। আর কী করার আছে, আপাতত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছি না।
বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার সঙ্গে শনিবার একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার পারিবারিক সূত্র জানায়, তিনি শনিবার বাসায় অবস্থান করছিলেন। কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি।
শনিবার ডিবিপ্রধান আরও বলেন, বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানিয়ে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় নেন; কিন্তু তিনি ইনসিকিউরড (নিরাপত্তা শঙ্কা) ফিল করছেন এমন কোনো তথ্য ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কিংবা পুলিশকে জানাননি। এছাড়া আমাদের কাছেও তিনি আসেননি।
ডিবিপ্রধান বলেন, উনি (এমরান আহম্মদ) নিরাপত্তা শঙ্কায় আছেন- এমন তথ্য আমাদের কাছে নেই। মার্কিন দূতাবাসে উনি কেন গিয়েছেন তা আমি জানি না। যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় অনেকেই সেখানে যান। এর মধ্যে অনেকেই মিথ্যা তথ্য দিয়ে সেখানে (দূতাবাসে) যান। অনেকেই পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম (রাজনৈতিক আশ্রয়) পাওয়ার জন্য সেখানে যান। তার নিরাপত্তার কোনো শঙ্কা থাকলে থানা পুলিশ কিংবা ডিবির কাছে আসতে পারেন।
এমরানকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশ অনুযায়ী এ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এরপর নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে শুক্রবার বিকালে স্ত্রী ও তিন কন্যাসন্তান নিয়ে দূতাবাসে আশ্রয় নেন এমরান। তখন এমরান আহম্মদ যুগান্তরকে জানিয়েছিলেন, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে হাজির হয়েছেন। বন্ধের দিন হওয়ায় নিরাপত্তাকর্মীরা ভেতরে যেতে দেননি। মূল ফটকের পাশে একটি কক্ষে তাদের বসতে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, পরে তাদের দূতাবাসের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বেশ কিছু সময় পরিবারসহ অবস্থান করেন। এরপর সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে নিরাপত্তার আশ্বাসে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াসহ তার পরিবারের সদস্যরা দূতাবাসের ভিসা গেট দিয়ে একটি মাইক্রোবাসে (ঢাকা মেট্রো-গ ২৮-০৪৭৮) লালমাটিয়ার বাসার উদ্দেশে বের হয়ে যান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাসায় ফিরে গেছেন।
ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকরা জানান, সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে দূতাবাসের বাইরে থেকে একটি গাড়ি আসে। সেই গাড়িতে পরিবারসহ দূতাবাস ছেড়ে যান এমরান।
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে বিবৃতি সংক্রান্ত বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন এমরান আহম্মদ। শুক্রবার সকালে এমরান আহম্মদকে বরখাস্তের বিষয়টি জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
এদিকে পরিবারকে নিয়ে এমরান নিরাপত্তা চেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে যাওয়ার বিষয়টি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তিনি যুগান্তরকে বলেন, এজন্যই তো নাটক সাজিয়েছে। বিষয়টি আমি দেখছি।