Logo
Logo
×

জাতীয়

যে কারণে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেননি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২৫ পিএম

যে কারণে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেননি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল

শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি, তার সম্মানহানি করা হচ্ছে বলে মনে করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। 

তিনি বলেন, তাকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।

প্রসঙ্গত, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি (বিবৃতি) পাঠিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় দেড় শতাধিক ব্যক্তি। তাদের মধ্যে শতাধিক নোবেলজয়ী রয়েছেন। এই খোলা চিঠির প্রতিবাদে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীদের বিবৃতি লেখা কাগজে আইনজীবীদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে আইনজীবীদের ‘নাম’ ও ‘স্বাক্ষর’-ঘর রয়েছে। 

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, ‘ড. ইউনুসের পক্ষে ১০৭ জনেরও বেশি নোবেল বিজয়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রেসিডেন্টসহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছেন। 

তারা বলেছেন, ড. ইউনূসকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। এর বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে নোটিশ করা হয়েছে যে, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার জন্য। কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করব না।’ তবে এ কার্যালয়ের অন্যরা বলছেন, এ বিষয়ে কোনো নোটিশ বা নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

কেন করবেন না এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখেন ইসরাইলে বিচার সম্পর্কিত বিষয়ে আইন সংস্কার হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে সে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল অবস্থান নিয়েছেন। তাই এটা আমার নিজস্ব চিন্তা সেই রকমই।’ 

তিনি বলেন, ‘যে বিবৃতিটা ড. ইউনূসকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন দিয়েছেন এটার সঙ্গে আমি একমত। আমি মনে করি ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি, তাকে সম্মানহানি করা হচ্ছে, এটা বিচারিক হয়রানি।’

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া বিবিসিকে বলেন, ড. ইউনূস শুধু বাংলাদেশেরই নয়, বিশ্বেরও সম্পদ। মূল বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে তিনি ‘বিচারিক হয়রানি’র শিকার হচ্ছেন। আমার কাছেও বিষয়টা সেরকমই মনে হয়।

এ বিষয়ে জানতে অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত জানেন না।

এমন বক্তব্যের পেছনে ভূঁইয়ার ‘অন্য উদ্দেশ্য থাকতে পারে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের আইন কর্মকর্তাদের সরকার নিয়োগ দিয়ে থাকে।

ক্ষমতাসীন দলের মতের বিরুদ্ধে যায় এমন কোন বক্তব্য দেওয়ার ঘটনাও সরকারী আইন কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরল। যেকারণে ভূঁইয়ার এ বক্তব্য নিয়ে বেশ আলোচনা তৈরি হয়েছে।

এমরান আহমেদ ভূঁইয়া ২০১৯ সালে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। আইন কর্মকর্তাদের একাংশ মনে করেন রাষ্ট্রীয় পদে অধীনস্থ থাকাকালীন ভূঁইয়া এমন মন্তব্য করতে পারেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তারা যেহেতু রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, সেহেতু রাষ্ট্রপক্ষের স্বার্থ রক্ষা করা আইনজীবী হিসেবে তাদের দায়িত্ব।

অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে নোবেল বিজয়ী ও সুপরিচিত নেতাদের বিবৃতির পর বাংলাদেশের সরকারসমর্থক এবং পেশাজীবী একাধিক সংগঠন ওই বিবৃতির প্রতিবাদের বিবৃতি দিয়েছে।

বিবৃতি প্রদানকারী সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির মত সংগঠন।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা এই মুহুর্তে আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে।

বর্তমানে অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের দায়ের করা একটি মামলা রয়েছে এবং সেটির শুনানি চলছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে।

গত মাসের শেষদিকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আরো ১৮টি মামলা করা হয়।

এছাড়া অধ্যাপক ইউনূসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা একটি মামলা রয়েছে ।


 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম