আমি ওদের নাম দিয়েছি ‘ভুল ধরা পার্টি’: তথ্যমন্ত্রী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৩, ০৬:১৩ পিএম
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এরা কোনও কাজ করে না, অন্যে কী কাজ করে সেটির ভুল ধরে। আমি এজন্য ওদের নাম দিয়েছি ‘ভুল ধরা পার্টি’। রাত ১২টার পরে এই ভুল ধরা পার্টি টেলিভিশনে সরব হয়।
শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন-রেড ক্রিসেন্ট ফিজিও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন সেবাকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের প্রান্তিক মানুষের কথা ভেবে সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন ও রাষ্ট্রকে মানবিক করার ক্ষেত্রে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে চারটি প্রোগ্রাম আছে। যার একটি একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য।
মন্ত্রী বলেন, এটা বিরাট উদ্যোগ হলেও বিএনপিসহ নাগরিক সমাজের একাংশ এটিকে অভিনন্দন জানাতে ব্যর্থ হয়েছে, যারা কারণে-অকারণে জাতিকে জ্ঞান দেন। হয়তো কদিন পরে দেখা যাবে এখানে কী ভুল আছে সেটি তারা বের করার চেষ্টা করবেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তা বিশ্ব সম্প্রদায় থেকেও প্রশংসিত হচ্ছে। শুধু প্রশংসা করতে পারে না আমাদের দেশের বিএনপিসহ কিছু দল আর কিছু ব্যক্তিবিশেষ। এটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্য।
তিনি আরও বলেন, যে যাই বলুক না কেন, যতই সমালোচনা করুক না কেন, কাজ করলে সমালোচনা হবে। আমরা সমালোচনাকে সমাদৃত করার মানসিকতা পোষণ করি। সেই কারণে আমরা মনে করি সমালোচনা করলে ক্ষতি নাই। কিন্তু অন্ধের মতো সমালোচনা ভালো নয়। সবকিছুতে ‘না’ বলার সংস্কৃতি এবং ‘না’ বলার রাজনীতি রাষ্ট্রের জন্য ভালো নয়।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, মানবিক ও সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করার লক্ষ্যেই ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা চালু করেছেন। এখন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২২ প্রকার ভাতা দেওয়া হয়। প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষ নানা প্রকারের ভাতা পায়। আজ মানুষের স্বপ্নকেও হার মানিয়ে ছিন্নমূল মানুষকে ঘর করে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, যে কুষ্ঠ রোগীর পাশে আত্মীয়-স্বজনও যায় না, যে বেদে সম্প্রদায় নৌকায় বসবাস করে, যারা ঘর বাঁধে না, যে মানুষটি মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করতো, রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজতো, সে কখনও পাকা দালানের স্বপ্ন দেখতো না। সে স্বপ্ন দেখতো আমার যদি একটি দোচালা ঘর হতো! জননেত্রী শেখ হাসিনা জমির মালিকানাসহ ইতোমধ্যে সাড়ে আট লাখ পাকা টিনশেড ঘর করে দিয়েছেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বাংলাদেশের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেছে। দেশে নতুন নতুন বিশ্বমানের হাসপাতাল হচ্ছে। সেখানে সেবার মূল্য এত বেশি যে তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। সেজন্য আমাদের সরকার স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোর আধুনিকায়ন করেছে। হাসপাতালের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরেশন ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত অর্থোপেডিক সেন্টার যাতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের একটি জনপ্রিয় আস্থার প্রতীক হয়। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সেবার মানসিকতা নিয়েই কাজ করে। শুধু প্রতিষ্ঠান দাঁড় করালেই হবে না, সেবার মানটি রক্ষা করে এবং একই সঙ্গে স্বল্প মূল্যের সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
আমি আশা করবো, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতি মানুষের আস্থা এবং ভালোবাসা আরও প্রসারিত হবে, আরও বিত্তবানরা এগিয়ে আসবেন। আর্তমানবতার সেবায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়াবে।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আব্দুল ওয়াহ্হাবের সভাপতিত্বে এবং রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম সিটি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ট্রেজারার এম এ ছালামের ব্যক্তিগত অর্থায়নে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ফিজিও অর্থোপেডিক পুনর্বাসন সেবা কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব কাজী শফিউল আজম, ট্রেজারার এম এ ছালাম, চট্টগ্রাম সিটি ইউনিটের সহসভাপতি আলমগীর পারভেজ বক্তব্য রাখেন।