Logo
Logo
×

জাতীয়

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় পান্না কায়সারের বিদায়

Icon

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৩, ০৯:২১ পিএম

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় পান্না কায়সারের বিদায়

শহিদজায়া পান্না কায়সার শহিদ মিনারে বিশিষ্টজন, রাজনীতিকসহ সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। তারপর জানাজা শেষে মিরপুরে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে শায়িত করা হয়েছে। সবার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিয়েই চিরঘুমে গেলেন লেখক, শিশু সংগঠক পান্না কায়সার।

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রোববার বেলা ১১টায় পান্না কায়সারের লাশ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আনা হয়। এ সময় রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

লাশ শহিদ মিনারে আনা হলে সেখানে প্রথমে শ্রদ্ধা জানায় তার তৈরি শিশু-কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর’। কেন্দ্রীয় খেলাঘরের পক্ষে স্যালুট জানিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর লাশ খেলাঘরের পতাকা দিয়ে আবৃত করা হয়। এরপর খেলাঘরের বিভিন্ন শাখা শ্রদ্ধা নিবেদন করে। 

শ্রদ্ধা জানান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ, শিল্পী হাশেম খান, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।

পরে একে একে গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক কমিটি, ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঢাকা থিয়েটার, সম্প্রীতি বাংলাদেশ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সংস্কৃতি মঞ্চ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন পরিষদ, বাংলাদেশ গণআজাদী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, ছায়ানট, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, প্রজন্ম একাত্তরসহ আরও অনেক সংগঠন ও ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শিক্ষাবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি আমাদের দেশ, দেশের মানুষকে গড়তে সবসময় কাজ করেছেন।

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ১৯৭২ সালে আমরা প্রথম যখন রাজাকারদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করেছি সেই আন্দোলনে তিনি সামনের সারিতে ছিলেন। তিনি সারাজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দেশ তৈরিতে কাজ করে গেছেন। 

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ গড়ে তোলা আমাদের একটি বড় দায়িত্ব। পান্না কায়সার সেই দায়িত্ব সারাজীবন সুন্দরভাবে পালন করে গেছেন।

নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, তিনি অনেক সংগঠনের সঙ্গে নিজেকে জড়িত রাখলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি ছিলেন অনমনীয়।

আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ নির্মাণ করতে কাজ করেছেন। তার চলে যাওয়া আমাদের দেশের জন্য, রাজনীতির জন্য, শুদ্ধ সংস্কৃতির জন্য একটি বড় অপূর্ণতা দিয়ে যাবে।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে পান্না কায়সারের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। 

বাঙালির জন্য ক্ষতি-তথ্যমন্ত্রী: কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আজীবন সংগ্রামী লেখক গবেষক পান্না কায়সার ১৯৭৫ সালের পর হারিয়ে যাওয়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শানিত করেছেন। তার প্রয়াণ বাঙালির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। 

মন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তর সালের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হারিয়ে গিয়েছিল, অবদমিত করা হয়েছিল, সেই প্রতিক‚ল সময়েও তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শানিত করেছিলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, পান্না কায়সার সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। সংসার পাতার দুই বছরের মাথায় স্বামীকে হারিয়েছেন, তারপর তিনি আর নতুন করে সংসার পাতেননি। সন্তানদের মানুষ করেছেন, কষ্ট করেছেন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে থেকেছেন। আমরা তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই, তার বিদেহি আত্মার মাগফিরাত কামনা করি, স্রষ্টা যেন তাকে চিরশান্তিতে রাখেন। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম