মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র কাল থেকে পরীক্ষামূলক চলবে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৩, ০৪:১৫ পিএম
ফাইল ছবি
কক্সবাজারের মহেশখালীর কয়লাচালিত মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি আগামীকাল শনিবার পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে। এ ইউনিটের উৎপাদনক্ষমতা ৬০০ মেগাওয়াট। এটি ডিসেম্বরে পুরোপুরি চালু হতে পারে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক। সরকারের মেগাপ্রকল্পগুলোর অন্যতম মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি জাপানের সহায়তায় প্রায় ৫১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, কাল দুটি ইউনিটের মধ্যে প্রথমটি (মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্টের) পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বছরের ডিসেম্বরে ইউনিটের নিয়মিত উৎপাদন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্ল্যান্টের সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট, আগামী মার্চ বা এপ্রিল মাসে পুরোদমে উৎপাদনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এটি পুরোপুরি চালুর পূর্ব পরিকল্পনা ছিল।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, পুরো প্ল্যান্টে প্রতিদিন ১০ হাজার টন ও প্রতি ইউনিটে ৫ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হবে। এখন পর্যন্ত দুই লাখ টন কয়লা সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং ৬৫ হাজার টন আগামী ৭ আগস্ট উৎপাদন এলাকায় পৌঁছবে।
প্রকল্প পরিচালক জানান, জাহাজ থেকে সরাসরি ট্যাঙ্কে কয়লা আনলোড করার জন্য প্রকল্প এলাকায় দুটি জেটির পাশাপাশি ১৭ লাখ টন স্টোরেজ ক্ষমতার চারটি ট্যাংক ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে। ট্যাংকগুলোর ৬০ দিনের জন্য কয়লা সংরক্ষণের সক্ষমতা রয়েছে। জাহাজ থেকে কয়লা আনলোড করতে দেড় থেকে দুদিন সময় লাগবে।
কয়লা খালাস করা পরিবেশবান্ধব হবে। কারণ কয়লা সরাসরি জেটি থেকে ট্যাংকে অফলোড করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ১ হাজার ৬০৮ একর জমির ওপর স্থাপিত হচ্ছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কয়লা উত্তোলনের জন্য দুটি জেটি এবং কয়লা সংরক্ষণের জন্য চারটি ট্যাংক নির্মাণসহ প্রকল্পের অন্যান্য কাজ প্রায় শেষের পথে। মাতারবাড়ি গভীর বন্দর ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র সাইটের কাছে এলএনজি ও এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২৫ বছরের জন্য ও আজীবন ছাই সংরক্ষণের দুটি পৃথক ছাই পুকুর রাখা হয়। একটির আয়তন ৯০ একর ও অন্যটির ৬০০ একর জুড়ে বিস্তৃত। কয়লা সংরক্ষণের জন্য ৮০ একর জমিতে কোল ইয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার এবং জাইকার মধ্যে ২০১৪ সালের ১৬ জুন একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে জাইকা ৪৩,৯২১ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট ৭,৯৩৩ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার ও পিসপিজিসিবিএলের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রকল্পের দুটি অংশ আছে, যার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যটি বন্দর।