ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় চেম্বার আদালতের স্থিতাবস্থা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৩, ০৮:৫৫ পিএম
ফাইল ছবি
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ প্রতিষ্ঠানটির তিন পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় স্থিতাবস্থা (স্টেটাসকো) দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত এ স্থিতাবস্থা দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। ড. ইউনূসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। এ আদেশের ফলে মামলাটি যে আদালতে যে পর্যায়ে আছে, আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত সে পর্যায়েই থাকবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদেশের পর অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ সাংবাদিকদের বলেন, শ্রম আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল করা নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ জুলাই রুল জারি করেছেন। সে রুলটি স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিল। আদালত স্থগিতাদেশ না দিয়ে আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত মালাটিতে স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। ওই দিন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। সে পর্যান্ত মামলাটি যে আদালতে যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায়ই থাকবে।
ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আদালত এ মামলায় স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। এর ফলে শ্রম আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে থাকা মামলা ওই পর্যায়েই থাকবে। আগামী ২৭ জুলাই এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ রয়েছে। শ্রম আদালত সে সাক্ষ্য গ্রহণ করতে পারবে না। আর গত ১৯ জুলাই হাইকোর্ট মামলাটির অভিযোগ গঠন বাতিল নিয়ে যে রুল দিয়েছেন, চেম্বার আদালতের এ স্থিতাবস্থা না তোলা পর্যান্ত সেই রুলের শুনানিও হাইকোর্ট করতে পারবেন না।
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী না করা, অর্জিত ছুটি না দেওয়া এবং কল্যাণ তহবিলে মুনাফার ৫ শতাংশ না দেওয়ার অভিযোগ এনে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান। টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে আসামি করা হয় মামলায়। ইউনূস ছাড়া অন্য তিন আসামি হলেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক নুরজাহান বেগম, মো. আশরাফুল হাসান ও মো. শাহজাহান।
গত ৬ জুন শ্রম আইনের ৩০৩(ঙ) ও ৩০৭ ধারার অধীনে আসামিদের বিরুদ্ধে এ মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা। পরে ১৯ জুন শ্রম আদালতের অভিযোগ গঠনের আদেশ স্থগিত ও আদেশটি বাতিল প্রশ্নে রুল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. ইউনূসসহ চার আসামি। গত ১৯ জুলাই আবেদনটিতে শুনানি করেন আবেদনকারীদের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। আর ২৩ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। ওই দিন শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সপ্তাহের রুল জারি করেন।
গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ প্রতিষ্ঠানটির তিন পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। রাষ্ট্রপক্ষ ও মামলার বাদী কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পরিদর্শককে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এর মধ্যে রাষ্টপক্ষের আবেদনে মামলাটিতে স্থিতাবস্থা দিলেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।