Logo
Logo
×

জাতীয়

ঢাকা-১৭ আসনেও একতরফা ভোটের শঙ্কা হিরো আলমের 

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৩, ০৯:১৫ এএম

ঢাকা-১৭ আসনেও একতরফা ভোটের শঙ্কা হিরো আলমের 

এবার ঢাকা-১৭ আসনে ভোটার না হয়েও নির্বাচনে অংশ নিয়ে ফের প্রাদপ্রদীপের আলোয় এসেছেন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। ওই আসনে তার বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাতসহ সাত প্রার্থী। 

ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচন নিয়ে নিজের ভাবনা ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে শনিবার দৈনিক যুগান্তরের মুখোমুখি হন হিরো আলম। তার সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন মানিক রাইহান বাপ্পী।   

যুগান্তর: ঢাকা-১৭ আসনে ভোটার না হয়েও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। জয়ের বিষয়ে আপনি কতটুকু আশাবাদী? 

হিরো আলম: সত্যি কথা বলতে— নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আস্থা হারিয়ে গেছে। নির্বাচন করেও যা, না করেও তা। এবারও একতরফা হয়তো ভোট হয়ে যাবে। তার পরও আমি জয়ের আশায় আছি। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তা হলে আমি শতভাগ জয়ী হব। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হলে, ভোটাররা যদি ঘর থেকে বের হয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে, তা হলে আমি জয়ী হব। ১০০ পার্সেন্ট পাশ করব, আমি আশা রাখছি। 

যুগান্তর: কীভাবে আশা করছেন আপনি জয়ী হবেন? 

হিরো আলম: জনগণের ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। জনগণ আমাকে কথা দিয়েছে। আমার জন্য তারা অনেক কিছু করেছে। বড় বড় কথা বা ওয়াদা দিয়ে আমি জনগণের কাছ থেকে ভোট নেব না। 

যুগান্তর: আপনি এ আসনের ভোটার না। কেন নির্বাচন করছেন? 
হিরো আলম: বগুড়া-৪ ও ৬ উপনির্বাচনে আমাকে নয়ছয় করে হারানো হয়েছে। এর প্রতিবাদ মশাল হয়ে আমি ঢাকায় ভোট করছি। 

যুগান্তর: বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ আপনাকে আর্থিকসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। কতটা সত্য? 

হিরো আলম: দেখুন, আমি এ পর্যন্ত যতগুলো নির্বাচনে অংশ নিয়েছি, সবই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। আমার সহযোগিতা প্রয়োজন হলে, আমি কোনো দলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে যেতাম। আর পার্থ ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমি টাকা নিইনি কিংবা তিনি আমাকে কোনো টাকা দেননি। আপাতত কোনো দলের নেতার কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা নেওয়ার ইচ্ছা আমার নেই।

যুগান্তর: আপনি কি নিজে ভোটে দাঁড়ান? নাকি কেউ দাঁড় করিয়ে দেয়?

হিরো আলম: দেখুন, আমি যতগুলো নির্বাচন করেছি, সব স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। আমি যদি কারও কথায় দাঁড়াতাম, তা হলে কোনো না কোনো দলের প্রতীক নিয়ে দাঁড়াতাম। কিন্তু আমি তো স্বতন্ত্র দাঁড়িয়েছি। 
যুগান্তর: ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি দুদলেই মনোনয়ন দিলে কোনটি বেছে নেবেন?

হিরো আলম: এ মুহূর্তে কোনো দলে ঢোকার চিন্তা নেই। ভবিষ্যতে কোনো দল আমাকে প্রস্তাব দিলে ভেবে দেখব। যেহেতু বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগ কেউ আমাকে ডাকেনি। ডাকলে চিন্তাভাবনা করব। 

যুগান্তর: নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে আপনার বিস্তর অভিযোগ— এর পরও কেন দাঁড়ান?

হিরো আলম: নির্বাচনের অংশ নিচ্ছি দুই কারণে। প্রথমত হচ্ছে— মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে চাই। ঘুমন্ত মানুষকে জাগাতে চাই। আমি নির্বাচনে থাকা মানে, দশটা লোকের নজরে থাকা। নির্বাচনটা কেমন হচ্ছে? ঘুমন্ত মানুষকে জাগিয়ে এটাই বোঝাতে চাই— আপনারা আসুন, মাঠে নামুন। নির্বাচন করুন। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিন। এ দেশটাকে বাঁচাতে চাইলে আপনাকে নির্বাচনে আসতে হবে, নির্বাচন করতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। তা হলে দেখবেন দেশটা ঘুরে দাঁড়াবে। তাই সবকিছু ঠিক রেখে নির্বাচন করছি— মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর জন্য। আরেকটি হলো— দেশে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে না, সেটি আমি প্রমাণ করে দিতে চাই। 

যুগান্তর: আপনাকে নিয়ে অনেকে ট্রল করে, তাদের উদ্দেশে কিছু বলার আছে আপনার? 

হিরো আলম: দেখুন, অনেক সময় আমাকে যারা দুর্বল ভাবছে বা হাস্যকরভাবে উপস্থাপন করছে, তারা কিন্তু জানে না যে, পচা শামুকেও পা কাটে। তাদের উদ্দেশে একটা কথা বলতে চাই— যারা আমাকে একজন প্রার্থীর (আরাফাত) সঙ্গে তুলনা করছে সবার কাছে একটা অনুরোধ করছি— আপনারা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। আমি দেখতে চাই, সে কত বড় প্রার্থী। সে কত বড় শক্তিশালী। সুষ্ঠু একটা নির্বাচন দিয়ে ভোটের মাঠে পারলে হিরো আলমকে হারাক। 

যুগান্তর: আপনি যেকোনো বিষয় নিয়ে সবসময় আলোচনায় থাকেন। এর পর কি নিয়ে আলোচনায় থাকতে চান?

হিরো আলম: বিনোদন জগতে কাজ করছি, কাজ করব। সেটি অব্যাহত থাকবে। আর জনগণের সেবার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আলোচনায় থাকতে চাই । 

যুগান্তর: সম্প্রতি এক নায়িকা আপনার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে কী বলবেন? 

হিরো আলম: শুধু রিয়া নয়, আমার পেছনে দুজন মেয়ে লেগেছে। আমি মনে করি, তারা নিজে থেকে কিছু করছে না, তাদের লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে । কয়েক দিন আগে আমার পক্ষে ভালো ভালো কথা বলল। আর ঠিক নির্বাচনের আগে উলটাপালটা কথা কীভাবে বলে? এতেই বোঝা যাচ্ছে, তাদের কেউ লেলিয়ে দিয়েছে।

যুগান্তর: ঢাকায় নির্বাচন করতে গেলে সাধারণত খরচ বেশি হয়? আপনার অর্থের উৎস কী? 

হিরো আলম: এটা ভুল ধারণা, মানুষ যে কথা বলে নির্বাচন করলে টাকা লাগে। আপনি যখন দুর্বল হবেন, তখন আপনার টাকা লাগবে। টাকার বিনিময়ে ভোট করতে হবে। আর জনগণ যদি আপনাকে ভালোবাসে তা হলে টাকা লাগে না। সেখানে জনগণ ভালোবেসে ভোট দেবে । 

যুগান্তর: সবাই আপনার টাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন? 
হিরো আলম: আমি আগেও বলেছি আবারও বলছি— নির্বাচন করতে টাকা লাগে না। বিভিন্নজন বিভিন্ন সহযোগিতা দেয়। যেমন কেউ পোস্টার দেয় কিংবা মাইকিং খরচ দেয়। আর আমি মনে করি, এর বাইরে নির্বাচনে বাড়তি কোনো খরচ নেই। 

প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে আলোচনায় এসেছেন। বিশেষ করে বগুড়ায় উপনির্বাচন করে সবার নজর কেড়েছেন। সেখানে দুটি আসনে উপনির্বাচন করে একটিতে জয়ের দ্বারপ্রান্তে ছিলেন এই অভিনেতা। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম