নানা সমালোচনার মুখে ন্যূনতম ২ হাজার টাকা আয়কর দেয়ার বিধান বাতিল করে রোববার জাতীয় সংসদে অর্থবিল পাশ হয়েছে। এছাড়া পেট্রোলিয়াম জাতীয় পণ্যের শুল্ক হারে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির সংসদ-সদস্য ফখরুল ইমাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, পীর ফজলুর রহমান ন্যূনতম ২ হাজার টাকা আয়করের বিধান বাতিলের প্রস্তাব করেন। অর্থবিলের ওপর আলোচনায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুও ২ হাজার টাকা প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ইশারা দিয়ে বিধানটি বাতিলের কথা জানান।
১ জুন বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, রাষ্ট্রের একজন নাগরিকের অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে রাষ্ট্র কর্তৃক প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধার বিপরীতে সরকারকে ন্যূনতম কর প্রদান করে সরকারের জনসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ। এ ধরনের অংশীদারিমূলক অংশগ্রহণ দেশের সক্ষম জনসাধারণের মাঝে সঞ্চারণের লক্ষ্যে করমুক্ত সীমার নিচে আয় রয়েছে। অথচ সরকার থেকে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্নের বাধ্যবাধকতা আছে, এমন করদাতাদের কাছ থেকে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা কর আদায়ের প্রস্তাব করেন তিনি।
প্রস্তাবিত বাজেটে ৪৩টি সরকারি-বেসরকারি সেবা পেতে রিটার্ন জমার স্লিপ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ লাখ টাকার বেশি ঋণ নিলে, কোম্পানি পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার হলে, আমদানি-রপ্তানি নিবন্ধন সনদ (আইআরসি-ইআরসি) নিতে, সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে, সমবায় সমিতি নিবন্ধন নিতে, বিমা কোম্পানির সার্ভেয়ার হতে, ১০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের জমি-ফ্ল্যাটের দলিল করতে, ক্রেডিট কার্ড নিতে, পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ নিতে, ড্রাগ লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র পেতে; গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে বাচ্চা ভর্তি করতে, কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নিতে, অস্ত্রের লাইসেন্স নিতে, ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে, ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে, নির্বাচনে অংশ নিতে, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ১৬ হাজার টাকা হলে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ১৬ হাজার টাকার বেশি বেতন গ্রহণ করলে, পণ্য আমদানি-রপ্তানির বিল অব এন্ট্রি জমা দিতে রিটার্ন জমার স্লিপ বাধ্যতামূলক।