ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু শনিবার, নৌপথ-সড়কেও ছুটছে মানুষ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৩, ০৯:০৩ পিএম
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রাজধানী ছাড়ছে মানুষ। নাড়ির টানে রেল, নৌ ও সড়কপথে বাড়ি যাচ্ছে তারা। শনিবার থেকে ট্রেনে ছুটবেন ঈদ অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীরা। ঈদ উপলক্ষ্যে ২৮ জুন পর্যন্ত শুধু কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় দেড় লাখ যাত্রী রাজধানী ছাড়বেন।
রেলপথ: ১৪ জুন যেসব যাত্রী ২৪ জুনের অগ্রিম টিকিট কেটেছেন-তারা যাত্রা করবেন আজ। এছাড়া শুধু যাত্রার দিন (২৪ থেকে ২৮ জুন) ২৫ শতাংশ আসনবিহীন টিকিট বিক্রি হবে কাউন্টার থেকে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, আন্তঃনগর ট্রেনে প্রতিদিন প্রায় ২৮ হাজার যাত্রী কমলাপুর থেকে বিভিন্ন স্থানে যাবে। বিনাটিকিটে ভ্রমণ রোধে কমলাপুরসহ দেশের সব স্টেশনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ঢাকা রেলওয়ে বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ আলম কিরণ শিশির যুগান্তরকে জানান, ঈদ উপলক্ষ্যে ১ সপ্তাহ ধরেই মানুষ ট্রেনে রাজধানী ছাড়ছেন। তবে শনিবার (আজ) থেকে ঈদযাত্রায় ভিড় বাড়বে। ২৪ থেকে ২৮ জুন প্রতিদিন ৪১ জোড়া আন্তঃনগর এবং ৩৬ জোড়া মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাবে।
নৌপথ: পুরান ঢাকা প্রতিনিধি জানান, মানুষ এবার নৌপথে স্বস্তিতে রাজধানী ছাড়ছে। শুক্রবার সদরঘাটের ঢাকা নদীবন্দরে যাত্রীর চাপ ছিল তুলনামূলক কম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সোমবার অফিস ছুটির পর সদরঘাটে যাত্রীচাপ কিছুটা বাড়তে পারে। এ ঈদে ৩০ লাখ যাত্রী নৌপথে যাতায়াত করবেন। যাত্রীদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সঙ্গে নৌপুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড ও স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন।
ঢাকা নদীবন্দরে শুক্রবার দেখা গেছে, লঞ্চ টার্মিনাল, পন্টুনে তেমন ভিড় নেই। লঞ্চগুলোতে যাত্রীরা চাহিদামতো আসন সংগ্রহ করে যাত্রা করছেন। তবে অধিকাংশ কেবিন অগ্রিম বুক হয়ে গেছে। বরিশালগামী লঞ্চগুলোতে ডেক যাত্রীদের ৫০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ১৫০০ টাকা, ডাবল কেবিন ২৫০০ টাকা ও ভিআইপি কেবিন ৭০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। যা গত ঈদের থেকে কিছুটা বেশি বলে জানান কিছু যাত্রী। ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক (ট্রাফিক) কবির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সড়কপথ: ঈদে আগেভাগেই সড়কপথে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন অনেকেই। শুক্রবার সকাল থেকেই রাজধানী ছেড়েছে বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার বাস। অন্যদিনের তুলনায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুরে যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করেছে।
এবার ঈদের ছুটিতে সড়কপথে বাড়ি ফেরা মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতু চালুর ফলে যানজটের বিড়ম্বনা আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকার ঝুঁকি না থাকায় ওই অঞ্চলের মানুষকে ঈদযাত্রায় সড়কপথকেই বেছে নিতে দেখা গেছে।
এ ছাড়া রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ মহাসড়কের অবস্থা ভালো হওয়ায় এবারের ঈদযাত্রায় দীর্ঘ যানজটের আশঙ্কা কম বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ সড়কপথে বাড়ি ফিরছেন। আগে যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরিঘাটে অপেক্ষা করতে হতো, সেখানে এখন ৬ থেকে ৭ মিনিটেই পদ্মা সেতু দিয়ে গন্তব্যে যেতে পারছেন তারা।