বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি আবারও জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন।
মিন্নির আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স একাডেমির সামনে স্ত্রী মিন্নির সামনেই রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করেন নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সহযোগীরা।
গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন রিফাত মারা যান।
এর পর রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে ছয়জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করেছিলেন নিহত রিফাতের বাবা।
পরে একই বছরের ২ জুলাই ভোরে জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রধান আসামি নয়ন বন্ড (২৫) নিহত হন।
হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন পর ওই বছরের ১৬ জুলাই মিন্নিকে তার বাবার বাসা থেকে বরগুনা পুলিশ লাইনে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ হত্যায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে মনে হওয়ায় ওই দিন রাতেই মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। পরে একই বছরের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট মিন্নিকে জামিন দেন।
বিচার শেষে ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনের বিষয়ে রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা নারী ও শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান।
রায়ে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। পাশাপাশি ছয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার দণ্ডেও দণ্ডিত করেন। বাকি চারজনকে খালাস দেওয়া হয়।
পরে নিয়মানুসারে একই বছরের ৪ অক্টোবর ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছে। পাশাপাশি ৬ অক্টোবর মিন্নিসহ অন্য আসামিরা আপিল করেন।
মৃত্যুদণ্ডাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খাঁন হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
খালাস পেয়েছেন— মো. মুসা (পলাতক), রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।
পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করেছিলেন মিন্নি। পরে ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর সে আবেদনটি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জরিমানা স্থগিত করেন উচ্চ আদালত।