Logo
Logo
×

জাতীয়

বোরো ধান লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে: কৃষিমন্ত্রী

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৩ পিএম

বোরো ধান লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে: কৃষিমন্ত্রী

কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, চলতি মৌসুমে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯ লাখ ৭৬ হাজার হেক্টর কিন্তু অর্জন হয়েছে ৫০ লাখ হেক্টর। এ বছর যা টার্গেট করেছিলাম এর থেকে বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এবার বোরো ২ কোটি ১৫ লাখ টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আমরা আশা করছি দুই কোটি ২০ থেকে ২৫ লাখ টন অর্জন হবে। ইতোমধ্যে সারা দেশে ৩৩ এবং হাওড়ে ৯০ শতাংশ বোরো ধান কাটা হয়েছে।

রোববার সচিবালয়ে বোরো ধান নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিবছর ৪৮-৪৯ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করে থাকি। এবার সে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, হাওড়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এবং উঁচু জায়গাও রয়েছে। এ বছর হাওড়ে সবমিলিয়ে ৯ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। হাওড়ে উৎপাদনের সরকারি লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ লাখ টন। তিনি আরও বলেন, হাওড়ে ধান কাটা চরম ঝুঁকিপূর্ণ। আগে প্রতিবছরই দেখতাম হাওড় এলাকার কিছু অংশ ডুবে যেত, ধান নষ্ট হতো এবং কৃষকরা তাদের ধান ঘরে তুলতে পারতেন না। 

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চলতি বছর এই মুহূর্ত পর্যন্ত খবর হলো হাওড়ের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ৯০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। কারণ কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের তাড়াতাড়ি ধান কাটতে উৎসাহিত করা হয়েছে। সুনামগঞ্জে এক হাজার কম্বাইন হারভেস্টার ধান কেটেছে। ৬৬৮টি রিপার ধান কেটেছে। এবার তেমন বন্যাও আসেনি। সুতরাং এটি সরকারের একটা বড় অর্জন বলে আমি মনে করি। তিনি আরও বলেন, হাওড়ে বন্যা আসার আগেই যেন ধান কাটা যায় তেমন জাত নিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন।
একটা ভালো অগ্রগতি হয়েছে। আশা করা যায় যে, খাদ্য নিয়ে আর সমস্যা হবে না। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলেই রয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখি ও শিলাবৃষ্টিতে ধানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ড. রাজ্জাক বলেন, শিলাবৃষ্টিতে স্থানীয়ভাবে কিছুটা ক্ষতি হয়। হয়তো দু-একটা গ্রামে ক্ষতি হয়। শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক হারে ক্ষতি হওয়ার কথা তা কিন্তু হয়নি। আমরা ধরে নিয়ে নিয়েছি প্রতিবছর যে ক্ষতি হয় এবারও তাই হবে। বাংলাদেশের যে প্রকৃতি তাতে এটা হতেই পারে। এবার ধানের দামও মোটামুটি ভালো। চাষিরা ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করছেন, দাম নিয়ে তাদের কোনো অভিযোগ নেই বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।

ব্লাস্ট আক্রান্ত ব্রি-২৮ ধান মাঠ থেকে দ্রুত তুলে নেওয়া হবে বলে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চাষি যাতে এ ধান আর আবাদ না করেন এজন্য কৃষকদের নিরুৎসাহিত করছি। তিনি বলেন, নতুন জাতগুলোর মধ্যে একটা জাত ব্রি-২৮ বাংলাদেশে জনপ্রিয়। চালটাও চিকন, উৎপাদনও ভালো, আসেও আগে। কিন্তু সব জাতই দীর্ঘদিন চাষ করলে গুণাগুণ কমে যায়, বিভিন্ন রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রতিরোধ সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ব্রি-২৮ এত ভালো ধান, তবে এটা ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। অনেক জায়গায়ই চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমরা চাই খুব দ্রুত ব্রি-২৮ মাঠ থেকে তুলে নিয়ে আসতে। চাষি যাতে এ জাতের ধান আর চাষ না করেন এবং তাদের অন্য জাত চাষ করতে কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

দেশের বিভিন্ন স্থানে বিনা-৮৯ ও ৯২, বঙ্গবন্ধু-১০০, বিনা ধান ২৫ ভালো ধান হচ্ছে বলেও জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ জাতগুলো দ্রুত সম্প্রসারিত হওয়া দরকার। কৃষকের কাছে যাওয়া দরকার। বিনা ধান-২৫ এত চিকন চাল, এবার এত উৎপাদন হয়েছে, অস্বাভাবিক লাগছে। এবার এ জাতের ধান বিপ্লব ঘটাবে। বেশিরভাগ জেলায় এটা দেওয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, সরিষা, বাদাম, ভুট্টাÑসব ফসল নিয়েই আমরা কাজ করছি। এবার রমজানে ফলমূল, শাক-সবজিসহ কোনো পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হয়নি দাবি করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এবার তরমুজের দাম তুলনামূলকভাবে কম ছিল, অস্বাভাবিক গরমের মধ্যে তরমুজের চাহিদা ছিল প্রচুর। আল্লাহর রহমতে উৎপাদন ছিল প্রচুর। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা প্রায় মানুষেরই খাদ্যের চাহিদা মেটাতে পারছি। আমরা স্বপ্ন দেখছি এবং এ সরকার চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছে যে, আগামী দিনে আমরা পুরো জাতিকে পুষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়াব।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম