ছয়টি পৃথক প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে একসঙ্গে দুই লাখ ৩০ হাজার টন তিন ধরনের সার কিনছে সরকার। যেখানে আগের চেয়ে কেজিতে সর্বোচ্চ ১৬ টাকা পর্যন্ত দাম কমছে।
বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ৯০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
এছাড়া বৈঠকে এক লাখ টন এমওপি সার কিনতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রস্তাব এবং ৪০ হাজার টন ডিএপি সার কিনতে একই মন্ত্রণালয়ের আরেকটি প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের এসব বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি জানান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে বিসিআইসির জন্য রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় কাতারের মুনতাজাতের কাছ থেকে ১৪তম লটে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার ৯৯ কোটি ১১ লাখ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি কেজির দাম দাঁড়াচ্ছে ৩৩ টাকা।
বিসিআইসির আরেক প্রস্তাবে কাফকোর কাছ থেকে ১৫তম লটে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার ৯৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি কেজির দাম দাঁড়াচ্ছে ৩৩ টাকা ২১ পয়সা।
বিসিআইসির তৃতীয় প্রস্তাবে সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টের কাছ থেকে ২০তম লটে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার ৯৫ কোটি ২৫ লাখ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে দাম দাঁড়াচ্ছে ৩১ টাকা ৭৫ পয়সা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের গত সোমবারের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ কেনাকাটায় আন্তর্জাতিক বাজারে ইউরিয়া সারের দাম ছিল ৪৮ টাকা। সেই হিসাবে ইউরিয়া সারের তিনটি লটে প্রতি কেজি সারের দাম ১৫ টাকা থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
এদিন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বিএডিসির জন্য রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশনের কাছ থেকে প্রথম লটে ৫০ হাজার টন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার ২৩৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একই দামে ৫০ হাজার টনের দ্বিতীয় লট কেনার অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে।
এতে প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৪৭ টাকা ৫৪ পয়সা। যদিও গত সোমবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি এমওপি সারের দাম ছিল ৬০ টাকা। সেই হিসাবে এমওপির দামও কমেছে কেজিতে ১২ টাকা ৫০ পয়সা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তৃতীয় প্রস্তাবে বিএডিসির জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কোর ওসিপি এসএর কাছ থেকে দ্বিতীয় লটে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার প্রায় ২৩৯ কোটি ৩২ লাখ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি কেজির দাম পড়ছে প্রায় ৫৯ টাকা ৮৩ পয়সা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি ডিএপি সারের দাম ছিল ৭০ টাকা। এখানেও কমেছে ১০ টাকা করে।
সব ধরনের সারের দাম গত ১০ এপ্রিল থেকে পাঁচ টাকা করে বাড়ানোর পর বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ইউরিয়া সার ২৭ টাকা, ডিএপি সার ২১ টাকা, টিএসপি সার ২৭ টাকা ও এমওপি সার ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। দামের বাকি অংশ সরকারের ভর্তুকি থেকে যাচ্ছে।