ছিনতাইকারির চাপাতির কোপে ইস্টওয়েস্টের ছাত্রী আহত, মানববন্ধন

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:১২ পিএম

রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন আফতাবনগরে রোববার রাতে ছিনতাইকারির চাপাতির কোপে বেসরকারি বিশ্বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী আহত হয়েছেন। তার নাম অপূর্ণা আক্তার ইতি। তিনি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী।
ছিনতাইকারিরা তাকে কুপিয়ে আহত করে একটি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় সোমবার ইতির সহপাঠীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৬ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।
জানা গেছে, অপূর্ণা আক্তার ইতি আফতাব নগর ‘বি’ ব্লকে রয়েল্স হোস্টেলে থাকেন। রোববার রাত ১০টার পরে ঢাকা ইমপেরিয়াল কলেজ সংলগ্ন জিম থেকে বের হয়ে পায়ে হেঁটে তিনি বাসায় ফিরছিলেন।
৩-৪ জন ছিনতাইকারি তার পথরোধ করে মোবাইল ও টাকা-পয়সা কেড়ে নিতে চায়। এ সময় ইতি বাধা দিলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে তাকে আহত করে তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ইতির আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন। তাৎক্ষণিক তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আহত শিক্ষার্থীর সহপাঠী তানভীর কায়েস সাংবাদিকদের বলেন, ছিনতাইকারিরা ইতিকে ঘিরে ধরলে সে তার মোবাইল ও অন্যান্য জিনিসপত্র দিতে চায়নি। ছিনতাইকারিদের সে বাধা দেয়। এরপর তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে ছিনতাইকারিরা।
ইতির জিমের এক সহপাঠী বলেন, রাতে ইম্পেরিয়াল কলেজ সংলগ্ন জিম থেকে বের হয়ে বাসায় ফিরি। এরপর খবর পাই একটি মেয়ে ছিনতাইকারির কবলে পড়ে আহত হয়েছে। পরে দৌড়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি তাকে লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেছে। ঘটনাস্থলে ছোপছোপ রক্ত পড়ে আছে।
বাড্ডা থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ যুগান্তরকে বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মেয়েটিকে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সোমবার সকালে বাসায় আনা হয়েছে। তার দুই হাতের বাহুতে চাপাতির আঘাত রয়েছে। আমরা ছিনতাইকারিদের সনাক্ত এবং গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।
এদিকে বাড্ডা থানার এসআই আব্দুস শাকুর যুগান্তরকে বলেন, এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠিরা ইস্টওয়েস্ট আফতাবনগর ক্যাম্পাসে সোমবার বিকেলে মানববন্ধন করেছে। তারা মানববন্ধনে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছেন।
এদিকে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, অপর্ণা ইতিকে কুপিয়ে জখম করার বিষয়টি দ্রুত বিচারের আওতায় আনা, অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনা, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা লাগানোর ব্যবস্থা করা, আইডিয়ালের সাকোতে সন্ধ্যার পরে পুলিশের টহল বসানো, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের গলি সংলগ্ন গার্লস হোস্টেল গুলোর আশপাশে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো এবং সব রাস্তা ও গলিতে জরুরিভিত্তিতে ল্যামপোস্ট বসিয়ে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে মানববন্ধন থেকে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে সন্ধ্যা ৭ টার পরই হেটে চলাফেরা করতে নিরাপত্তাহীন মনে হয় নিজেদেরকে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে কেউ কুপিয়ে চলে গেলেও কেউ জানবে না।
ইয়াসিন কবির নাহিদ নামে এক শিক্ষার্থী তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, আমাদের ইউনিভার্সিটির ঠিক সোজা গলিতে শ’খানেক গার্লস হোস্টেল আছে। কে দায়িত্ব নিবে আমাদের আপনার ক্লাসমেটের?
ভার্সিটিতে পড়ার স্বার্থে সবার এসব হোস্টেলে থাকা। মনের আনন্দে কেউ এই এলাকায় থাকে না। আমার ভার্সিটি আমার জীবনের নিরাপত্তার দায়িত্ব না নেক, কিন্তু সুরক্ষিত করার জন্য কিছু অগ্রিম ব্যাবস্থা তো নিতে পারে!
তিনি বলেন, আমাদের ৬ দফা আন্দোলনের কোনটাই কষ্টসাধ্য অথবা অযৌক্তিক না। একদম বেসিক কিছু দাবি, যা এই এলাকায় অনতিবিলম্বে জারি হওয়া খুবই জরুরি।