ঈদ সামনে রেখে চাঙ্গা ইসলামপুরের কাপড়ের বাজার
সাকেরুল ইসলাম, জবি
প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:২০ পিএম
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে জমে উঠেছে দেশের সর্ববৃহৎ কাপড়ের পাইকারি মার্কেট ইসলামপুর। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত ইসলামপুরের মার্কেটগুলো। মার্কেটে পাওয়া যায় বাহারি রংয়ের থ্রি-পিস, স্যালোয়ার কামিজ, শাড়ি, শার্ট-প্যান্ট, পাঞ্জামিসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক। পাওয়া যাচ্ছে বিদেশি ব্যান্ডের কাপড়।
এবার বিক্রি কেমন, জানতে চাইলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। কেউ বললেন, প্রতিবার রোজার আগেই বেচাকেনা শুরু হলেও এবার বেচাকেনা শুরু হয়েছে একটু দেরিতে। আবার কেউ বললেন, সন্তোষজনক নয়।
চায়না মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী বলেন, কাপড়ের দাম বৃদ্ধি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উর্ধ্বগতির প্রভাবে মানুষের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া কিছু খুচরা ব্যবসায়ী মূলধন হারিয়েছেন। ফলে কাপড় বিক্রি কম হচ্ছে।
ইসলামপুরের হাজি শরফুদ্দিন ম্যানশন, হাজি ইউসুফ ম্যানশন, আমানউল্লাহ কমপ্লেক্স, লতিফ টাওয়ার, এ মাবুদ রাইন টাওয়ার, লায়ন টাওয়ার, মদিনা ভবন, হাজি শামসুদ্দিন ম্যানশন, হালিম প্লাজা, সোনার বাংলা মার্কেটসহ আশপাশের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাহারি পোশাকে সুসজ্জিত প্রতিটি দোকান, বিক্রিতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা পছন্দসই পোশাক কিনে কার্টন ভরে নিয়ে যাচ্ছেন গন্তব্যে। পাইকার ও খুচরা দুইপর্যায়ের ক্রেতা এখন ভিড় করছেন।
কিছুটা কম দামের আশায় অনেক খুচরা ক্রেতাকে পাইকারি দোকানে ভিড় করতে দেখা গেছে। মোড়ে মোড়ে মালপত্র ওঠানো-নামানো হচ্ছে। রাস্তায় যানবাহনের ভিড় থাকায় মাথায় বোঝাই করে মালামাল পরিবহন করছে শত শত শ্রমিক।
ব্যবসায়ীরা বলেন, রমজানের শুরুতে এবারের বিক্রি মন্দাভাব ছিল। তবে দুই দিন ধরে ব্যবসাটা একটু চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। চাঁদ রাত পর্যন্ত চলবে ধুম বেচাকেনা।
ইসলামপুর বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির নিবন্ধিত দোকান রয়েছে চার হাজারেরও অধিক। এছাড়া ছোট বড় দোকানসহ অনিবন্ধিত আরও দোকান রয়েছে কয়েক হাজার।
ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, মান ও কাজ ভেদে প্রতি পিস পাঞ্জাবি মিলছে ৬০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকায়। নানা কারুকাজ ও রঙের থ্রি-পিস পাওয়া যাচ্ছে প্রতি পিস ৭০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকায়।
ইসলামপুর নওয়াব বাড়ি সড়কের আল মামুন টেক্সটাইলের এক বিক্রয়কর্মী বলেন, শবেবরাতের পর থেকে বিক্রি ভালো হচ্ছিল। এখন একটু কম হলেও আশা করি সামনে বাড়বে এবং বিশ রোজা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
বরিশাল থেকে আসা পাইকারি ক্রেতা মোজাম্মেল হক বলেন, শবে-বরাতের আগে এসে কিছু কাপড় কিনে নিয়েছিলাম। সেগুলো শেষ হয়ে যাওয়ায় আবার নিতে আসলাম।
সার্বিক বিষয় জানতে চাইলে ইসলামপুর বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নেছার উদ্দীন মোল্লা বলেন, শবেবরাতের পর থেকে ব্যবসায় একটা চাঙ্গাভাব দেখা গিয়েছিল। রোজার শুরু থেকে বিক্রি কম হলেও সামনে বাড়বে বলে আশা করি।
শবেবরাতের আগের কাপড়গুলো শেষ হয়ে গেলে পাইকাররা আবার কাপড় কিনতে আসবেন। তবে কাপড়ের দাম বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থার কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রি কম বলে জানান তিনি।