প্রস্তাবটি পাশ হলে নির্বাচন সুষ্ঠু করা সহজ হবে: ইসি আলমগীর
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৯:২৭ পিএম
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশের পর তা বাতিলের ক্ষমতা ইসির হাতে দিয়ে আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন। ওই প্রস্তাব পাশ হলে নির্বাচন সুষ্ঠু করা সহজ হবে বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা যে সংশোধনী দিয়েছি, সেটা পাশ হলে সুষ্ঠু নির্বাচন করা অনেক সহজ হবে। বুধবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপিকে আলোচনার আমন্ত্রণ জানিয়ে ইসির চিঠি প্রসঙ্গে মো. আলমগীর বলেন, তারা (বিএনপি) এ পর্যন্ত আমাদের (ইসির) সঙ্গে কোনো কথা বলেনি। কমিশন গঠনের পর প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই আমাদের কাজ। প্রত্যেকটা দল নিজের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করবে। আমরা আমাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা বলব। এর মধ্য দিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা হবে। তিনি বলেন, ‘একবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা আসেন নাই। আরেকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে আসেন নাই। আবার চিঠি দিলাম। যদি আসেন, আলোচনা হবে। আর তাদের রাজনৈতিক বক্তব্যের বিষয়ে কমিশনের মন্তব্য নাই, সেটি চিঠিতেও বলা আছে।’
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়েও বিএনপি আমাদের কিছু বলেনি। সেটি যদি আমাদেরকে চিঠি দিয়ে বলতো, তাহলে আমরা আলোচনা করে দেখতাম। রাজনৈতিক দল তো স্বাধীন। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তারা যদি মনে করেন যে, এই বিষয়ে তারা আলোচনায় আগ্রহী। সেটি আমাদের বললে আমরা বসব। যদি আমরা দেখি আলোচনা করা যেতে পারে, তাহলে আলোচনা করুক। আমাদের কিছু করণীয় থাকলে অবশ্যই শতভাগ চেষ্টা করব।’
২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। এবারও সেই পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আসা না আসা কিন্তু রাজনৈতিক দলের বিষয়। কোনো দলকে জোর করে নির্বাচনে আনার আইনগত অধিকার কমিশনকে দেওয়া হয়নি। কোনো রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে নির্বাচনে না এলে, কমিশনের কি কোনো ক্ষমতা আছে তাকে জোর করে আনার? হ্যাঁ, আইনে আছে কোনো দল যদি পরপর দুবার নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে তাদের নিবন্ধন বাতিল করে দিতে পারে কমিশন। কিন্তু কোনো দল যদি নির্বাচনে না আসে, কমিশনের তো কোনো কিছু করার নেই।’
বিএনপি না এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে এই কমিশনার বলেন, ‘ইসির ৪০টি নিবন্ধিত দল আছে এবং এবছর যারা নিবন্ধন পাবে, সবগুলো দল নির্বাচনে আসলে সেটাকে আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলব। তবে বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের ইতিহাসে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে কোনো নির্বাচনেই সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। ওই নির্বাচনগুলো যে অংশগ্রহণমূলক হয়নি, এটা বলা যাবে না। তবে বড় রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, তাহলে সেটিকে পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক বলা যাবে না।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অংশ নিতে পারবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি তো আইনগত বিষয়। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি প্রার্থী হওয়ার জন্য কমিশনে আবেদন না করছেন এবং কমিশন বিষয়টি নিয়ে বসে পুঙ্খানুপুঙ্খ না দেখছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব না। তিনি যদি প্রার্থী হওয়ার জন্য নমিমেশন সাবমিট করেন, তখন রিটার্নিং অফিসার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন তার ওই সময়ের অবস্থাটা কী। কারণ এখনকার যে অবস্থা, আর তখনকার অবস্থা তো এক রকম নাও হতে পারে।’
এ বিষয়ে আইন কী বলে-জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যোগ্যতা-অযোগ্যতা নির্ভর করবে যখন তিনি প্রার্থী হয়ে আবেদন করবেন, তখন তার অবস্থানটা কেমন তার ওপর। আইনগত দিকটা তখন। এই মুহূর্তে তো আগ বাড়িয়ে কিছু বলা যাবে না।’
সীমানা পুনঃনির্ধারণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, সংসদীয় আসনের সীমানার খসড়া প্রকাশের পর ১৮৬টি আবেদন পড়েছে। এর মধ্যে ১২৬টা আপত্তি খসড়ার বিপক্ষে ও ৬০টি পড়েছে বর্তমান সীমানা বহাল রাখার পক্ষে। পক্ষে থাকলে সেগুলোর শুনানির প্রয়োজন হবে না। বিপক্ষে বা পক্ষে-বিপক্ষে থাকলে সেগুলোর শুনানি হবে।