শোরুমে ভাঙচুর
জিএমপি কমিশনারকে দোষারোপ মাহির, ‘ডাহা মিথ্যা’ বললেন নজরুল
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২৩, ০৬:১১ পিএম
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী যুবলীগ নেতা রাকিব সরকারের গাড়ির শো রুমে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে মহানগরীর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্ব পাশে সনিরাজ কার প্যালেসে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় মাহি গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার (জিএমপি) মোল্যা নজরুল ইসলামকে দোষারোপ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। তবে জিএমপি কমিশনার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এই অভিযোগ ‘সর্বৈব মিথ্যা’।
মাহিয়া মাহির স্বামী রাকিব সরকার গাজীপুরে যুবলীগের রাজনীতি করেন। তার বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে। স্বামীসহ মাহি এখন ওমরা পালনের জন্য সৌদি আরবে রয়েছেন।
শোরুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে সনিরাজ কার প্যালেস গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাব, দরজা জানালার কাঁচ এবং টেবিল চেয়ার ভাঙচুর ও শোরুমের সাইনবোর্ড খুলে নেওয়া হয়। শোরুমের অফিসকক্ষ তছনছ করে এবং টাকা পয়সা লুট করে নেয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
শুক্রবার ভোরে মাহি ফেসবুকে লাইভে এসে ঘটনার বিস্তারিত জানান। এরপর তিনি ফেসবুকে বেশ কয়েকটি পোস্ট করেন এই হামলা নিয়ে।
মাহির অভিযোগ, ইসমাইল ওরফে লাদেন নামে প্রতিপক্ষ তাদের শো রুম দখল করে নিয়েছে। আর এই কাজে সহযোগিতা করেছেন জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম। তিনি দেড় কোটি টাকার বিনিময়ে গাড়ির শোরুম দখল করে দিচ্ছেন।
মাহি এও জানান, দেশে ফিরে ১৮ মার্চ শনিবার বিকাল ৫ টায় ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ সংলগ্ন সনি রাজ কার প্যালেসে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনার বিস্তারিত তিনি জানাবেন।
তবে অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে পুলিশ বলছে, জায়গা নিয়ে মালিকানার দ্বন্দ্বে ‘মারামারি’ হয়েছে।
জিএমপির বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সানোয়ার জাহান জানান, ‘৯৯৯ এ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে হামলাকারীদের কাউকে পাওয়া যায়নি। শো রুমের জায়গা নিয়ে মালিকানার দ্বন্দ্বে মারামারির ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ওসি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, এই অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা। দুপক্ষের দ্বন্দ্বে পুলিশকে জড়ানোর কিছু নেই। একটি শ্রেণি যারা দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকায় চাঁদাবাজি করছে, দখলদার, মাদক ব্যবসায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জিএমপি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তারা এখন সেলিব্রেটিকে পুঁজি করে আমাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ বানোয়াট এই অভিযোগ এনেছে। এ ঘটনায় আমি কিংবা গাজীপুর মহানগর পুলিশের সংশ্লিষ্টতার কোনো সুযোগ নেই।
জিএমপি কমিশনার বলেন, রাকিব সরকার জমি দখল করে নিয়েছেন, এই মর্মে প্রতিপক্ষ গ্রুপ মামলার আবেদন করেছে। রাকিবের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও অস্ত্র—ধারায় তিনটি মামলায় পুলিশের এফআরটি (ফাইনাল রিপোর্ট ট্রু) রয়েছে।
পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ‘আমি জিএমপিতে যোগদানের পর কোনো পক্ষই জমির বিষয়টি আমার সামনে আনেনি। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁদের চিনিও না। মাহির এই অভিযোগে আমি মর্মাহত।’