যাত্রাবাড়ীর শাওন হত্যার রহস্য উদঘাটন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৮:৫৬ পিএম
আধিপত্য বিস্তারের জেরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মীর হাজিরবাগে শাওন খুন হন। এক মাস আগে স্থানীয় বাসিন্দা রজবের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির পর তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় শাওনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তারা হলো মিজানুর রহমান ও তার সহযোগী জুয়েল ওরফে জুয়েল রানা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে মীর হাজিরবাগ এলাকায় শাওন নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত শাওনের ভাই বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়।
র্যাবের মুখপাত্র আরও জানান, শাওন টিকাটুলিতে একটি ট্রাভেলস কোম্পানিতে চাকরি করতেন। গ্রেফতার ব্যক্তিরা তার পরিচিত এবং একই এলাকার বাসিন্দা।
গত বছর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে শাওনের সঙ্গে রজবের বাগবিতণ্ডা হয়। গত মাসে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি রজব তার বড় ভাই মিজানকে জানায়। এরপর মিজানের নেতৃত্বে তারা শাওনকে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে।
ঘটনার রাতে শাওন তার স্ত্রীর জন্য ওষুধ আনতে বাসা থেকে বের হন। এ সময় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মিজান মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলের কাছে অবস্থান করেন। আসামি রজব হঠাৎ শাওনকে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে।
তখন জুয়েল রাস্তার মোড়ে পাহারার দায়িত্বে ছিল। শাওন গুরুতর জখম নিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে আসামিরা আবারও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। ঘটনার পরপরই মিজান ও জুয়েল মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
র্যাবের দাবি, মিজান যাত্রাবাড়ী এলাকার চিহ্নিত অপরাধী। তার নামে যাত্রাবাড়ী ও মীরহাজিরবাগ এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও মারামারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের পর সে শ্যামপুর এলাকায় তার আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করে। তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় পাঁচটি মামলা রয়েছে। আর জুয়েল একটি ওয়ার্কশপে কাজ করত। সে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
মিজানের সঙ্গে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি ও মারামারিতে জড়িত ছিল জুয়েল। তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় চারটি মামলা রয়েছে।