Logo
Logo
×

জাতীয়

রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধান খুঁজছে জাপান

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২১, ০৮:১৭ এএম

রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধান খুঁজছে জাপান

ফাইল ছবি

বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধান খুঁজছে জাপান। এই পুরো অঞ্চলে ভবিষ্যতে স্থিতিশীলতা আনতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য সক্রিয় পরিবেশ তৈরি করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে এবং যখনই উপযুক্ত সময় আসবে, তখনই মিয়ানমার পক্ষের কাছে বিষয়টি উত্থাপন অব্যাহত রাখবে।

কসমস গ্রুপের জনহিতকর প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক : ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে ইতো এসব কথা বলেন।

রোববার অনুষ্ঠিত এ সংলাপে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। সভাপতিত্ব করেন প্রখ্যাত কূটনীতিক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
 
সভায় আলোচক প্যানেলে ছিলেন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) বিশেষ দূত মো. আবুল কালাম আজাদ, জাইকার বাংলাদেশ অফিসের প্রধান প্রতিনিধি হায়াকাওয়া ইউহো, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ডা. সালেহউদ্দিন আহমেদ, টোকিওর স্যাক্রেড হার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাসাকা ওহাশি, লেখক ও কলামিস্ট মনজুরুল হক, টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব পাবলিক পলিসির ডিন অধ্যাপক তাকাহারা আকিও এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম।

রাষ্ট্রদূত ইতো জানান, যখন তারা এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও শান্তির কথা বলেন, তখন মানবিক সহায়তা এবং মানবিক সংকট খুব বড় একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে এ মুহূর্তে দেশটিতে কী ঘটছে তা অনুমান করা খুব কঠিন। মিয়ানমার এখন কোন দিকে চলছে, সে সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট চিত্র নেই। এখন  সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রকৃতপক্ষে কেউই সুস্পষ্ট ধারণা দিতে পারবেন না।

তারিক এ করিম বলেন, আশা করছি ২০২২ সালে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচনে অস্থায়ী সদস্য প্রার্থী জাপান নিরাপত্তা পরিষদে এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এ সাবেক কূটনীতিক বলেন, সম্ভবত নীল হেলমেটের অধীনে শান্তিরক্ষা বাহিনী বা একই নীল হেলমেটের অধীনে আবার কোনো আঞ্চলিক শান্তিরক্ষা বাহিনীর প্রয়োজন হবে। মিয়ানমারে যে অশান্তি চলছে, একবার আপনি তা নিরসন করতে পারলে দেশটির অভ্যন্তর থেকেই সম্ভবত একটি সমাধান বের হতে শুরু করবে। আমি আমাদের সব বন্ধুকে বিশেষ করে জাপানের প্রতি অনুরোধ করব, যাতে এশিয়ায় তাদের অংশে শান্তি বজায় থাকে এবং বিশৃঙ্খলা দেখা না দেয়।

তিনি আরও বলেন, যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়ানোর উপায় বের করতে হবে। মিয়ানমার প্ররোচনার মধ্যে রয়েছে এবং এই প্ররোচনাই একসময় বিস্ফোরণে রূপ নেবে।

বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক প্রসঙ্গে তারিক করিম বলেন, স্বপ্নকে একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীলতা অর্জনে বাংলাদেশকে জাপানের সহায়তা করা উচিত।

কক্সবাজার ও ভাসানচর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যুক্ত করা খুবই জরুরি। ভাসানচর ও কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবির উভয়ের জন্য আমাদের একটি বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘ শিগগিরই ভূমিকা রাখবে বলে জাপান আশা করছে।

তিনি আরও বলেন, টেকসই সমাধানের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভাসানচর প্রকল্পটি সফল হতে চলেছে। অন্যথায় পুরো প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হতে পারত।

বাংলাদেশ কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং এনজিওগুলোর মাধ্যমে জাপান রোহিঙ্গা সহায়তায় ১৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে।

জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোতেগি তোশিমিৎসু এবং মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রানার বারগেনার গত মে মাসে মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।

এর আগে গত মার্চ মাসে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনকালে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া মিশন রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম