
প্রিন্ট: ০১ মে ২০২৫, ১২:২৯ এএম
এ বছর ‘চিকিৎসক পদক’ পেলেন যারা

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২১, ০২:১০ এএম

প্রতীকী ছবি
আরও পড়ুন
এ বছর বাংলাদেশ মেডিকেল টিচার্স ওয়েলফেয়ারস ট্রাস্ট ও প্ল্যাটফর্ম অব মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল সোসাইটির চিকিৎসক পদক পেয়েছেন ১৬ জন চিকিৎসক ও ৩ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও অন্য দুই গুরুত্বপূর্ণ পেশার ২জনকে এ পদক দেয়া হয়েছে।
বুধবার রাতে অনলাইনে এ পদক ঘোষিত হয়। প্ল্যাটফর্মের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে তা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
এর আগে বাংলাদেশ মেডিকেল টিচার্স ওয়েলফেয়ারস ট্রাস্ট ও প্ল্যাটফর্ম অব মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে ১ থেকে ৭ এপ্রিল চিকিৎসক সপ্তাহ পালন করে। ‘স্বাস্থ্যখাতের সকল অংশে চিকিৎসকদের সমান অংশীদারিত্ব নিশ্চিত এক আধুনিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অন্যতম শর্ত’-প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে এ চিকিৎসা সপ্তাহ পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, আইসিডিডিআর, বি’র সংক্রামক রোগ বিভাগের মিউকোসাল ইমিউনোলজি ও ভ্যাক্সিনোলজি ইউনিটের সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও বিভাগীয় প্রধান ড. ফেরদৌসী কাদরী, বাংলাদেশ মেডিকেল টিচার্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের সহ-সভাপতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের বৃহৎ সংগঠন ওজিএসবির নবনির্বাচিত সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা, বাংলাদেশ মেডিকেল টিচার্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. রোকন উদ্দীন ও প্ল্যাটফর্ম অব মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল সোসাইটির সভাপতি ডা. ফয়সাল বিন সালেহ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করে প্ল্যাটফর্মের সদস্য দিলোয়ারা ইয়াসমিন প্রিয়া।
অনুষ্ঠানে চিকিৎসাখাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও ভূমিকার জন্য ১৬ ব্যক্তি ও ৩টি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ মেডিকেল টিচার্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে চিকিৎসক পদক প্রদান করা হয়। ১৬ জন ব্যক্তির মধ্যে রয়েছেন ১৪ জন চিকিৎসক, ১ জন আইনজীবী ও ১ জন সাংবাদিক।
চিকিৎসক পদক পেলেন যারা
পদক প্রদানের ক্ষেত্রসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. অধ্যাপক ডা. খন্দকার মানজারে শামীম, চিকিৎসক ব্যসিক এন্ড এলায়েড
২. অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, চিকিৎসক, ব্যসিক এন্ড এলায়েড
৩. অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, চিকিৎসক, মেডিসিন এন্ড এলায়েড
৪. অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) ডা. আব্দুল মালিক, চিকিৎসক, মেডিসিন এন্ড এলায়েড
৫. অধ্যাপক ডা. এ জেড এন মাইদুল ইসলাম, চিকিৎসক, মেডিসিন এন্ড এলায়েড
৬. অধ্যাপক ডা. মো. খলিলুর রহমান, চিকিৎসক, সার্জারি এন্ড এলায়েড
৭. ডা. মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, চিকিৎসক, সার্জারি এন্ড এলায়েড
৮. অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী, চিকিৎসক, গাইনোকোলজি এন্ড এলায়েড
৯. অধ্যাপক ডা. রাশিদা বেগম, চিকিৎসক, গাইনোকোলজি এন্ড এলায়েড
১০. অধ্যাপক ডা. এম কিউ কে তালুকদার, চিকিৎসক, পেডিয়াট্রিক্স এন্ড এলায়েড
১১. অধ্যাপক ডা. এম এ ফয়েজ, চিকিৎসক, চিকিৎসা গবেষণা
১২. অধ্যাপক ডা. তাহমিনা বানু, চিকিৎসক, চিকিৎসা গবেষণা
১৩. অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান মোল্লা, চিকিৎসক, ডেন্ট্রিস্ট্রি এন্ড এলায়েড
১৪. অধ্যাপক ডা. এম মনির হোসেন, চিকিৎসক, সমাজসেবা
১৫. ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (হাসপাতাল সরকারি পর্যায়)
১৬. বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল (হাসপাতাল বেসরকারি পর্যায়)
১৭. হাইপারটেনশন এন্ড রিসার্চ সেন্টার, রংপুর ( সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান, সমাজসেবা)
১৮. জেড আই খান পান্না (আইনজীবী)
১৯. মোহসীন-উল হাকিম (সাংবাদিক, যমুনা টিভি)
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) মহাসচিব ডা. মো. এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, অনুষ্ঠানটির আয়োজক প্রতিষ্ঠান একটি চমৎকার কাজ করেছেন। যারা বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। একটি বিষয় সবার নজরে আনতে চাই, বাংলাদেশের সমসাময়িক করোনা ব্যবস্থাসহ ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ের অনেক চিকিৎসক নিয়োজিত ছিল, এমনকি অনেক হাসপাতালের পরিচালকও অবদান রাখেন। তাই মাঠপর্যায়ে কাজ করা এসব চিকিৎসকদেরকে যাতে ভবিষ্যতে সম্মানিত করা হয় সে আশা করি।
তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষের কাছে আশা ব্যক্ত করছি আমরা যারা এ অসময়ে কাজ করে যাচ্ছি তাদেরকে সাহায্য করবেন। শুধু দুঃসময়ে না, সুসময়েও চিকিৎসকদের স্মরণ করবেন। সরকারের কাছে আবেদন করবো, দেশের মানুসের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যাতে অনেক অর্থ ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়া হয়। আমি বলবো এ সরকার সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত হয়েছে স্বাস্থ্যখাতে অবদানের জন্য।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. মো. এহতেশামুল হক চৌধুরী আরও বলেন, অনুষ্ঠানটির আয়োজক প্রতিষ্ঠান একটি চমৎকার কাজ করেছেন। যারা বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঈর্ষণীয় পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। একটি বিষয় সবার নজরে আনতে চাই, বাংলাদেশের সমসাময়িক করোনা ব্যবস্থাসহ ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ের অনেক চিকিৎসক নিয়োজিত ছিল, এমনকি অনেক হাসপাতালের পরিচালকও অবদান রাখেন। তাই মাঠপর্যায়ে কাজ করা এসব চিকিৎসকদেরকে যাতে ভবিষ্যতে সম্মানিত করা হয় সে আশা করি।"
তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষের কাছে আশা ব্যক্ত করছি আমরা যারা এ অসময়ে কাজ করে যাচ্ছি তাদেরকে সাহায্য করবেন। শুধু দুঃসময়ে না, সুসময়েও চিকিৎসকদের স্মরণ করবেন। সরকারের কাছে আবেদন করবো, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যাতে অনেক অর্থ ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়া হয়। আমি বলবো এ সরকার সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত হয়েছে স্বাস্থ্যখাতে অবদানের জন্য, তাই আমরা বাংলাদেশে এমন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তৈরি করবো যা বিশ্বের কাছে রোল মডেল হয়ে দাঁড়াবে।
আইসিডিডিআর, বি’র সংক্রামক রোগ বিভাগের মিউকোসাল ইমিউনোলজি ও ভ্যাক্সিনোলজি ইউনিটের সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও বিভাগীয় প্রধান ড. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, "চিকিৎসকদের প্রচেষ্টার কারণেই এখনো দেশে মৃত্যুহার কম রয়েছে। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে তাঁরা যে পরিমাণ অবদান রেখেছেন তা অবিস্মরণীয়।"
এছাড়াও প্ল্যাটফর্মের সদস্য তরুণ চিকিৎসকদের অবদান ও কার্যক্রম নিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। পরিশেষে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজের বক্তব্য শেষ করেন তিনি।
দেশের প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা বলেন, "আমি নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবতী মনে করছি যে চিকিৎসক সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরেছিলাম। দেশে প্ল্যাটফর্মের তথ্যমতে এখন পর্যন্ত যে ১৭৯ জন চিকিৎসক করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। মহামারীর সময় চিকিৎসকরা যেভাবে নানান প্রতিকূলতা পার করে কাজ করে যাচ্ছে তা অবশ্যই অতুলনীয়। আমি অত্যন্ত গর্বিত এবং আনন্দিত যে চিকিৎসক পদকের মাধ্যমে আমরা কয়েকজন চিকিৎসককে সম্মানিত করতে পারছি।"
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিকেল টিচার্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. রোকন উদ্দীন বলেন, মুজিবশতবর্ষে এবং স্বাধীনতার ৫০তম বর্ষপূর্তিতে বাংলাদেশ মেডিকেল টিচার্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ও প্ল্যাটফর্ম অব মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল সোসাইটির উদ্যোগে চিকিৎসক সপ্তাহ-২০২১ আয়োজনের জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
তিনি বলেন, আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি চিকিৎসক পদক-২০২১ প্রাপ্তদের বাছাই করবার কঠিন ও দুঃসাধ্য কাজটি যারা সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন উক্ত কমিটিকে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেও সকল প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে ভবিষ্যতে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের চিকিৎসকসমাজের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাবার আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
পদক প্রদান কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. রোকন উদ্দিন বলেন, সমাজে চিকিৎসা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মান জানাতে পেরে আমরা নিজেরাও সম্মানিত বোধ করছি। ভবিষ্যতে চিকিৎসা খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্ব বাংলাদেশ মেডিক্যাল টিচার্স ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট একযোগে কাজ করবে।
প্ল্যাটফর্ম অব মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল সোসাইটি'র কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. ফয়সাল বিন সালেহ বলেন, "আজ আমাদের জন্য অনেক আনন্দের একটি দিন। মুক্তিযুদ্ধ এবং এর পরবর্তী সময়ে এমনকি করোনাকালেও চিকিৎসকদের অনেক অবদান ছিল। তাই ১-৭ তারিখ প্ল্যাটফর্ম এবং বাংলাদেশ মেডিকেল টিচার্স ওয়েলফার ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়। এরকম পদক প্রদান চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে কমন ছিলো না। আমরাই মনে হয় প্রথম শুরু করেছি। আমরা আরো যে চিকিৎসক সংগঠন আছে তাদের সাথে কথা বলে এটাকে কিভাবে মডিফাই করা যায় তা নিয়ে কাজ করবো।"