সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব ধীরাজ কুমার নাথ আর নেই। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
ধীরাজ কুমার নাথের পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে ল্যাবএইডের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার বিকালের দিকে অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।
ধীরাজ কুমার নাথ নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার রসুলপুর ইউনিয়নের রফিকপুর গ্রামে ১৯৪৫ সালের ৯ জানুয়ারি এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে বাণিজ্য বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর ১৯৬৬ সালে নোয়াখালী সরকারি কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন।
১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগদান করেন এবং পাবনা ও পটুয়াখালী জেলায় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগে সেকশন অফিসার হিসেবে নিয়োজিত হন। ১৯৭৮ সালে গাজীপুর মহকুমার প্রথম মহকুমা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। তিনি ১৯৮০-৮১ সালে কুমিল্লা জেলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
১৯৮১ সালে সিনিয়র পলিসি পুলের সদস্য হিসেবে উপসচিব পদে পদোন্নতি লাভ করেন এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপসচিব (সমন্বয়) হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। ১৯৯৮ -১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।
২০০১ সালে সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব হিসেবে ২০০৩ সালে দীর্ঘ ৩৪ বছর সরকারি চাকরির পর অবসরগ্রহণ করেন।
২০০৬ সালের অক্টোবর মাসে রাষ্ট্রপতি ইয়াজ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মৎস্য ও পশুসম্পদ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।
ধীরাজ কুমার নাথের সম্পাদিত ১২টি বই প্রকাশ পেয়েছে। তার মধ্যে ভ্রমণকাহিনি, প্রবন্ধ সংগ্রহ, উপন্যাস উল্লেখযোগ্য। একই সঙ্গে তিনি যুগান্তরসহ দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে নিয়মিত কলাম লিখতেন। পাশাপাশি কয়েকটি সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও সংযুক্ত ছিলেন।