Logo
Logo
×

জাতীয়

বিআইজিডির গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ

করোনায় বোরো কৃষকের লাভ কমেছে ৪০ শতাংশ

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২০, ০৯:২১ পিএম

করোনায় বোরো কৃষকের লাভ কমেছে ৪০ শতাংশ

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে বোরো চাষী কৃষকদের লাখ কমেছে ৪০ শতাংশ। শতকরা ৯৯ জন কৃষকই তাদের ধান সরকার নির্ধারিত ১০৪০ টাকা মণের চেয়ে কম দরে বিক্রি করতে হয়েছে।

সারা দেশে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদনের চেয়ে ৪ দশমিক ৮২ কোটি মণ বোরো ধান কম হয়েছে। যার অর্থমূল্য ৩ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা।

ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। ২ হাজার ৮৩৪ জন বোরো কৃষকের ওপর পরিচালিত গবেষণাটি সোমবার একটি ওয়েবিনারে প্রকাশ করেন বিআইজিডি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নারায়ণ দাস। গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে আয়োজিত ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন।

এতে যুক্ত হয়ে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও কৃষি অর্থনীতি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম. এ. সাত্তার মণ্ডল, এসিআই সিড এর বিজনেস ডিরেক্টর সুধীর চন্দ্র নাথ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বিআইজিডির সিনিয়র উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা প্রমুখ।

গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, সারা দেশের ২ হাজার ৮৩৪ জন কৃষককে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে এই গবেষণাটি করা হয়। ড. নারায়ণ দাসের নেতৃত্বে বিআইজিডির রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট সাইফুল ইসলাম ও সিমাব রহমান এই গবেষণাটি সম্পন্ন করেছেন।

এতে বলা হয়, গবেষক, নীতিনির্ধারক ও কর্মক্ষেত্রের বিচারে কৃষিখাত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ক্ষেত্র। করোনা প্রাদুর্ভাব পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুত্থানেও সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে এই কৃষিখাত। করোনার প্রাদুর্ভাবের সময়টিতে পড়েছে বোরো ধান কাটার সময়ে।

যে বোরো বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ চাষযোগ্য জমিতে আবাদ করা হয়। আর সেই কারণেই বোরো ধানের চাষ, উৎপাদনে করোনার প্রভাব ঠিক কতখানি তা বোঝার কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখে ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) বোরো কৃষকের ওপর একটি গবেষণায় করেছে। 

গবেষণায় উঠে এসেছে, কৃষকরা করোনাকালে শ্রমিক সংকট, পণ্য পরিবহন ও আর্থিক টানাপোড়েনের মতো সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। যদিও গত বছরের বছরের তুলনায় এ বছরের ফলনও প্রায় একই রকম আছে, তবুও এ সব সমস্যার কারণে বোরোর উৎপাদন কৃষকের প্রত্যাশিত পরিমাণের চেয়ে সাত শতাংশ (প্রতি একরে চার মণ) কমেছে। কৃষকের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ১৩ শতাংশ, কৃষককে বাড়তি মজুরি দিতে হয়েছে ১৭ শতাংশ।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারী শতকরা ৯৯ জন কৃষককেই তাদের ধান সরকার নির্ধারিত ১০৪০ টাকা মণের চেয়ে কম দরে বিক্রি করতে হয়েছে। এসব কারণে কৃষকের প্রত্যাশিত লাভের পরিমাণ কমে গেছে ৪০ শতাংশ। হিসাব মতে, পুরো দেশে প্রত্যাশিত উৎপাদনের চেয়ে ৪.৮২ কোটি মণ বোরোর উৎপাদন কমেছে যার অর্থমূল্য ৩ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা।

ড. নারায়ণ দাস বলেন, গবেষণায় অংশ নেয়া কৃষকেরা গড়ে ৭৬৫ টাকা মণ দরে ধান বিক্রয় করেছেন। ৮০ শতাংশ কৃষক যারা ৯০০ টাকার বেশিতে প্রতি মণ ধান বিক্রয় করতে পেরেছেন, তারা দাম নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। কৃষকেরা যাতে ফসলের ন্যায্য মূল্য পান সেদিকে নীতিনির্ধারকদের মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল বোরো চাষীদের উৎপাদন, ব্যয় ও লাভের ওপর করোনা প্রভাব সম্পর্কে ধারণা লাভ করা, কৃষকের সমস্যা নিরুপণ ও সমস্যার উত্তরণে প্রয়োজনীয় উপায় খুঁজে বের করা।

বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন বলেন, কৃষিতে সরকারি ঋণের সঠিক সরবরাহ প্রক্রিয়া তৈরিতে আমাদের গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। এখানে আমাদের অনেক কিছু করার আছে। খুব দ্রুতই সরবরাহ প্রক্রিয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের উদ্যোগী হতে হবে।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম