স্কুলে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান বেলা ১১টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২০, ০৭:৫৪ পিএম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফাইল ছবি
রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মুজিববর্ষের সব অনুষ্ঠান বেলা ১১টার মধ্যে শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেছেন, আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান রাজধানীর তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দর প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মুজিববর্ষের সব অনুষ্ঠান বেলা ১১টার মধ্যে শেষ করতে হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হবে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গঠিত নিরাপত্তাবিষয়ক উপকমিটির সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
এ সময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ, সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির জনকের জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিবছর এ দিবসটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়। রাজধানীসহ সারা দেশের স্কুলে শিশু দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। এবার রাজধানীতে জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে স্কুলের দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সময়সীমা কমিয়ে বেলা ১১টার মধ্যে শেষ করার সরকারি নির্দেশনা জারি হচ্ছে। রাজধানীজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীর স্কুলগুলোতে জাতীয় শিশু দিবসের বিভিন্ন কার্যক্রম বেলা ১১টার মধ্যে শেষ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অনুরোধ জানানো হবে।
তিনি বলেন, জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পালনে রাজধানীসহ সারা দেশের লাখ লাখ মানুষ মুখিয়ে আছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে দেশ-বিদেশের লক্ষাধিক অতিথির সমাগম ঘটবে। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের প্রধান, দেশি-বিদেশি অতিথি, কূটনীতিকদের আসন গ্রহণসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আমাদের দেশের ভিআইপিদের জন্যও সে ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। নাশকতা প্রতিরোধই শুধু নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা গুজব ছড়াবে তাদের দিকেও নজর রাখা হবে। মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানের প্রতিটি স্তরেই বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এখন পর্যন্ত নাশকতার কোনো আশঙ্কা নেই। গোয়েন্দা সংস্থাও এমন কিছু জানায়নি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী কেন্দ্র করে কোনো নাশকতা হবে, তা আমরা ভাবতেই পারি না। এমন কিছু হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিম সব সময় প্রস্তুত থাকবে। দেশব্যাপী সিটি কর্পোরেশন, বিভাগীয়, জেলা, উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তার উপকমিটি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো যখনই প্রয়োজন হবে সভা করবেন। ৩টা ১৫ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠানস্থলের সব গেট বন্ধ হয়ে যাবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে প্রতিবাদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেটাই আমাদের বক্তব্য। নতুন করে আমাদের কিছু বলার নেই। কোনো ব্যক্তি কী বলল বা কী করল সেটি দেখার বিষয় না। ভারত মুক্তিযুদ্ধে যে সাপোর্ট আমাদের দিয়েছে, তা সব সময় স্মরণ করি। আমরা মনে করি, তিনি আসবেন। আমরা চলব আমাদের মতো করে। আমরা অসাম্প্রদায়িক দেশ। সেভাবেই আমরা চলব।’
বিএনপিকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সবাই এতে অংশ নেবেন বলে আশা করছি।’
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকসহ যারা আসবেন তাদের বিষয়ে কাজ চলছে। কারা আসছেন কিছু দিনের মধ্যে তা চূড়ান্তভাবে জানা যাবে। কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান আসবেন। তাদের জন সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এটি বড় আকারের প্রোগ্রাম। এখানে কালচারাল প্রোগ্রামে হাজার খানেক পারফর্মার থাকবেন। বিশাল আয়োজনে বিপুল সংখ্যক অতিথি আসবেন, দর্শকরা থাকবেন, নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের দেখতে হবে।’