পাপিয়ার পাপাচার নিয়ে সাংবাদিকদের তথ্য দেবে না ওয়েস্টিন

যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০২:৩৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া বিলাশবহুল প্রেসিডেনশিয়াল স্যুইট ভাড়া নিয়ে মাসের পর মাস অবস্থান করলেও এ সম্পর্কে সাংবাদিকদের কোনো তথ্য দেবে না বলে জানিয়েছেন গুলশানের ঢাকা ওয়েস্টিন হোটেল কর্তৃপক্ষ।
তদন্তের স্বার্থে ও নীতিগতভাবেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে তারা দাবি করেন। তবে পাপিয়ার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সব ধরনের তথ্য দেয়া হচ্ছে বলে জানায় হোটেল কর্তৃপক্ষ।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পাপিয়া তার অতিথিদের প্রথমে নিয়ে যেতেন ওয়েস্টিনের লবিতে। পরে লাঞ্চ বা ডিনার শেষে সেখান থেকে নিয়ে যেতেন তার নামে বরাদ্দকৃত বিলাসবহুল প্রেসিডেনসিয়াল স্যুইটে।
২৩ তলাবিশিষ্ট ঢাকা ওয়েস্টিন হোটেলের লেভেল-২২ এ ১ হাজার ৪১১ বর্গফুট জায়গাজুড়ে বিলাসবহুল প্রেসিডেনসিয়াল স্যুইট। সেখানে অতিথিদের সুন্দরী তরুণীদের সঙ্গে কিছুক্ষণ বৈঠক করতেন পাপিয়া। এরপর পছন্দসই তরুণীকে নিয়ে গোপন কক্ষে প্রবেশ করতেন ভিআইপিরা।
ওয়েস্টিনের ২২ তলায় চার বেডরুমের ওই স্যুইটের প্রতিরাতের ভাড়া সাধারণভাবে দুই হাজার ডলারের মত।
হোটেলটির বিপণণ যোগাযোগের সহকারী পরিচালক সাদমান সালাউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ঘটনা সম্পর্কে অবহিত আছি। আমাদের কঠোর নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা এই ধরনের ঘটনার জন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।
তিনি বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চলমান তদন্তে সহায়তা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সমস্ত ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতার হাত বাড়ানো হয়েছে। একটি অতিথিসেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে, সব অতিথির সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা আমাদের প্রধান বিবেচ্য বিষয়। সংশ্লিষ্ট ঘটনার আইনানুগ তদন্তের প্রেক্ষিতে বর্তমানে হোটেল কর্তৃপক্ষ কোনও ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবে।
বুধবার বিকালে বিমানবন্দর থানার ওসি বিএম ফরমান আলী যুগান্তরকে বলেন, রাজধানীর বিমানবন্দর থানার এক মামলার রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে তদন্ত কর্মকর্তাদের নানা তথ্য দিয়েছেন পাপিয়া। আমরা যেসব তথ্য পাচ্ছি তাতে অবাক হচ্ছি। যাচাই করা ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।
তিনি বলেন, পাপিয়ার অপকর্মের সঙ্গে হোটেলের কে কে জড়িত ছিল, তার অস্ত্র ও ইয়াবা ব্যবসার পার্টনারই বা কারা ছিল, তার সঙ্গে পাওয়া জাল টাকার উৎসই বা কি, কাদের আশ্রয়-প্রশয়ে তিনি এ পর্যায়ে এসেছেন- সব বিষয়েই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম যুগান্তরকে বলেন, মামলাটি এখন থানা পুলিশ তদন্ত করছে। র্যাবের পক্ষ থেকে তদন্তের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমতি পাওয়ার পর র্যাব আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত করবে।
তিনি জানান, পাপিয়ার অপকর্মের সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। হোটেল ওয়েস্টিনের কেউ পাপিয়ার অনৈতিক কাজে জড়িত ছিল কিনা সে বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পরই এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে।