Logo
Logo
×

জাতীয়

‘আবরার হত্যা বুয়েটের ঐতিহ্যে কালিমা লাগিয়ে দিয়েছে’

Icon

ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০১:৪০ পিএম

‘আবরার হত্যা বুয়েটের ঐতিহ্যে কালিমা লাগিয়ে দিয়েছে’

জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। ফাইল ছবি

জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেছেন, ‘আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ঐতিহ্যে কালিমা লাগিয়ে দিয়েছে। তার মৃত্যুর পর জানতে পারলাম, শুধু বুয়েটেই নয় বাংলাদেশের অধিকাংশ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এ ধরনের নির্যাতন চলছে।’

বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ভালো ছাত্র হওয়ার চেয়ে ভালো নাগরিক হওয়া বেশি জরুরি। এই মেধা দিয়ে আমরা কি করব?

শুক্রবার বুয়েটের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে দিনব্যাপী ‘গ্রান্ড রিইউনিয়ন-২০২০’র আয়োজন করে বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক আইনুন নিশাত।

বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্বাগত ভাষণ দেন বুয়েট ছাত্রকল্যাণ পরিষদের পরিচালক ও অ্যালামনাইয়ের সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম ও  অ্যালামনাইয়ের মহাসচিব ড. সাদিকুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, বুয়েটের অনেক বড় ঐতিহ্য রয়েছে। দুঃখজনকভাবে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড বুয়েটের ঐতিহ্যে কালিমা লেগেছে। এ ঘটনার পর জানতে পারলাম শুধু বুয়েটে নয়, বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নির্যাতন চলে আসছে। এটা আমাদের খুবই বিস্মিত করেছে।

তিনি বলেন, দেশের সেরা এবং মেধাবী শিক্ষার্থীরাই বুয়েটসহ নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পায়। তাদের মাঝে যদি এই অমানবিক মানসিকতা থাকে তাহলে এই মেধা দিয়ে কী করব? আজ এই প্রশ্ন নিজেদের করতে হবে এবং এর পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের যারা আজ শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের একটা মৌলিক প্রশ্ন করতে হবে, আমরা কি শুধু পরীক্ষার খাতায় নম্বর পাওয়ার জন্য শিক্ষা গ্রহণ করছি? আমাদের ভালো ছাত্র হওয়ার চেয়ে ভালো নাগরিক হওয়া বেশি জরুরি।

সভাপতির বক্তব্যে বুয়েট অ্যালামনাই সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, বুয়েট প্রতিষ্ঠার ১৫৪ বছরে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সবচেয়ে মর্মান্তিক এবং মারাত্মক। সারা দেশ এবং সারাবিশ্বে এ ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আশা করছি এর সুষ্ঠু এবং কার্যকর বিচার হবে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় বুয়েট অ্যালামনাই কর্মসূচি পালন করেছে। সেখানে আমাদের দাবির মধ্যে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি বন্ধ করা। পুরো শিক্ষাব্যবস্থা থেকে দুরবস্থা দূর করতে হলে লেজুড়বৃত্তির রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এটি বন্ধ করার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থার খারাপ অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম নিহত আবরারের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেন, আমি শুরুতেই আবরারের বিদেহী আত্মা এবং সব ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। বুয়েট অ্যালামনাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এরকম সুন্দর অনুষ্ঠান উপহার দেয়ার জন্য।

তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে হবে। সনাতনী চিন্তা থেকে বেরিয়ে আধুনিক চিন্তা নিয়ে বিশ্বের দরবারে দাঁড়াতে হবে। এ কাজে বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে হবে।

পুনর্মিলনী উপলক্ষে দিনব্যাপী এ আয়োজনে ছিল ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানের সমাহার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ছিল জুমার নামাজের বিরতি, পরে মধ্যাহ্নভোজ।

দুপুর আড়াইটা থেকে ‘আশা-হতাশা-ভালোবাসার বুয়েট’ শীর্ষক স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এটি পরিচালনা করেন অধ্যাপক আইনুন নিশাত। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল র্যাচফেল ড্র, ক্রীড়া, গেমস ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম