বাংলাদেশের জন্য ১০ হাজার হজ কোটা বাড়াল সৌদি
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৮:২৮ এএম
পবিত্র কাবা শরিফ। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশি হজযাত্রীদের জন্য ১০ হাজার হজ কোটা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। সে হিসেবে এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯১ জন হজপালন করার সুযোগ পাবেন।
বুধবার সকালে মক্কায় সৌদি সরকার ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ২০২০ সালের হজ চুক্তির প্রথম বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদিত হয় বলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী নাজমুল হক সৈকত যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন।
সৌদি আরবের স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় বাংলাদেশের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ এবং সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ সালেহ তাহের বেনতেনের মধ্যে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২০২০ সালের হজে বাংলাদেশের হজযাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে ১০হাজার। এজেন্সি প্রতি হজযাত্রীর সর্বনিম্ন সংখ্যা ১০০ এবং সর্বোচ্চ সংখ্যা ৩০০ বহাল থাকছে।
শতভাগ হজযাত্রীর ইমিগ্রেশন সৌদি আরবের পরিবর্তে ঢাকায় সম্পন্ন করা হবে। মদিনা থেকে হজ ফ্লাইটের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া হজ এজেন্সীগুলোর জন্য এআইটিএ সনদ থাকার শর্তারোপ করা হচ্ছেনা। প্রত্যেক হজযাত্রীর ইনসুরেন্স কভারেজ দিবে সৌদি সরকার।
রুট টু মক্কার ন্যায় ফিরতি হজযাত্রীদের জন্য রুট টু ঢাকার সুবিধা চালু করার বিষয় রয়েছে। এছাড়া পরিবহন সুবিধা বৃদ্ধি এবং উন্নত করার আশ্বাস রয়েছে। এবারও মিনায় দ্বিতল খাট না রাখার বিষয় উল্লেখ রয়েছে চুক্তিতে ।
মুসলিম জনসংখ্যার ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশের অনুকূলে সৌদি কর্তৃপক্ষ হজ কোটা বরাদ্দ দেয়। বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজপালনের সুযোগ পেয়ে আসছেন।
এবারের হজ চুক্তিতে বাংলাদেশের বর্তমান মুসলিম জনসংখ্যার ভিত্তিতে অতিরিক্ত বিশ হাজার বাংলাদেশি হজযাত্রীর হজের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। সে দাবি মেনে এবার ১০ হাজার কোটা বাড়ানো হল।
২০২০ সালের সৌদি-বাংলাদেশ হজচুক্তির উদ্দেশে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল রোববার সন্ধ্যায় সৌদি আরব পৌঁছান।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনিছুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান, হজ্জ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি এম. শাহাদাত হোসাইন তসলিম।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ, কনসাল জেনারেল, জেদ্দা এফএম বোরহান উদ্দিন, কাউন্সেলর (হজ) জেদ্দা মো. মাকসুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২০ সালে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে ১ আগস্ট। বাংলাদেশ থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে ২৫ জুন।
এর আগে বুধবার সকাল ১১টায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ’র নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ প্রতিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুল ফাত্তাহ বিন সোলায়মান মাশাতের নেতৃত্বে সৌদি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
২০২০ সালের হজ চুক্তির বৈঠকে বাংলাদেশের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ যেসব প্রস্তাব তুলে ধরেন: বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা বাড়ানো, রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় শতভাগ হজযাত্রীর ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে করা এবং হজ শেষে দেশে ফেরার সময় জেদ্দা ও মদিনা এয়ারপোর্টে হাজিসাহেবদের ইমিগ্রেশন সহজ করা, হাজিরা যাতে ৪২ দিনের পরিবর্তে ৩০ দিনের কম সময়ে দেশে ফিরতে পারেন সে ব্যবস্থা গ্রহণ, ভিসা প্রসেসিং সহজ করা, খাওয়া-থাকাসহ সৌদি আরবে বাংলাদেশি হাজিদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো, কালো তালিকাভূক্ত বেসরকারি এজেন্সীর তালিকা দ্রুত প্রকাশ করা, হাজিদের জন্য বাধ্যতামূলক খাবার সরবরাহের প্রথা বন্ধ করা এবং মিনায় উন্নতমানের বাংলাদেশি খাদ্য পরিবেশন ও উন্নতমানের আবাসনের ব্যবস্থা করা, হজের সময় বাংলাদেশের আইন লঙ্ঘন করে সৌদি এয়ারলাইন্সের টিকেট বিক্রির স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া, হজযাত্রী পরিবহনে বাস সার্ভিস উন্নত করা এবং বাংলাদেশী হাজিদের জন্য ট্রেন পরিবহনের সুবিধা বৃদ্ধি করা।