ত্বক ফর্সার ক্রিমে অতিমাত্রায় মিথাইল পারদ!
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৭:১৫ এএম
ত্বক ফর্সার ক্রিমে অতিমাত্রায় মিথাইল পারদ!
দেশীয় বাজারে সহজেই যে সব ত্বক ফর্সাকারী পণ্য পাওয়া যাচ্ছে এর বেশিরভাগই অতিমাত্রায় মিথাইল পারদযুক্ত। যা ব্যবহারকারী তথা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশকে উচ্চমাত্রায় ঝুঁকিতে ফেলছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তারা এ সব কথা বলেন।
একই সঙ্গে অতিমাত্রায় পারদযুক্ত পণ্যগুলো শনাক্ত করে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
পরিবেশ অধিদফতর (ডিওই) ও এনভায়রণমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো) যৌথ উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক সচিব ও এসডোর চেয়ারম্যান মার্গুব মোর্শেদ বলেন, পারদ হল একটা বিষাক্ত জিনিস। এর ব্যবহার হ্রাস করতে হবে। অনেক পর্যায়ে নিষিদ্ধ করতে হবে। বিকল্প প্রাকৃতিক জিনিসগুলোর ব্যবহার করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারকেই সবচেয়ে বেশি উদ্যোগী হতে হবে। শুধু কঠোর আইন ও আইনের প্রয়োগ করলেই এ সমস্যার সমাধান হবে না। এ বিষয়ে জনগণকে আরও সচেতন করতে হবে। দায়িত্বশীল সমাজ গড়ে তুলতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের সমাজে পুরুষতান্ত্রিক প্রবণতা হল- একটি মেয়েকে ফর্সা হতে হবে। তা হলে তার ভালো বিয়ে হবে। এ মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। মেয়েদের কালো গায়ের রং নিয়ে অনেক নাটক ও বিজ্ঞাপন তৈরি করা হয়ে থাকে। এগুলোতে পরিবর্তন হতে হবে। মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বে আজ সুন্দরীর সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। এখন সুন্দরী হতে হলে শুধু চামড়ার সৌন্দর্য নয়, শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ বিভিন্ন গুণের অধিকারী হতে হয়। অনেক কালো মেয়েও বিশ্বসুন্দরী হয়েছে। আমাদের খাদ্যে ও প্রসাধনীতে ভেজালের কারণে হৃদরোগ ও ক্যান্সারসহ নানা রোগ হচ্ছে। অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কেও আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্য আমাদের অমূল্য সম্পদ। তাই রাষ্ট্রকে এ বিষয়ে দায়িত্ব নিতে হবে।
বক্তারা বলেন, মিথাইল পারদ একটি নিউরোটক্সিক্যান্ট। এটি সহজেই প্লাসেন্টার ও রক্ত মস্তিষ্কের নালীর বাধা অতিক্রম করে মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে। বিশেষত অনাগত শিশুর ওপর পারদের হুমকি বেশি। এটি হতাশা, আত্মঘাতী প্রবণতা, পক্ষাঘাত, কিডনি সমস্যা, অ্যালজাইমার রোগ, কথা বলার সমস্যা ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতাসহ অ্যালার্জি জাতীয় রোগ সৃষ্টি করে।
এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন- এসডোর কারিগরি কমিটির প্রধান পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজি মোকলেসুর রহমান, বুয়েটের প্রফেসর ড. রওশান মমতাজ, প্রফেসর ড. মো. আবুল হাশেম, বিএসটিআইয়ের উপ-পরিচালক জোহরা সিদ্দিক প্রমুখ।