আপন জুয়েলার্সের দিলদারের বিরুদ্ধে পুত্রবধূর অভিযোগের সত্যতা পায়নি পুলিশ
আদালত প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০১৯, ০৯:৩৭ এএম
আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম ও পুত্রবধূ ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা। ফাইল ছবি
গর্ভের সন্তান নষ্ট ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমসহ দুইজনের বিরুদ্ধে পুত্রবধূর দায়ের করা মামলার সত্যতা খুঁজে পায়নি পুলিশ।
রোববার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমান ঢাকার সিএমএম আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনটি ঢাকার মহানগর হাকিম তোফায়েল হোসেনের আদালতে উপস্থাপন করলে আদালত দেখিলাম মর্মে স্বাক্ষর করেন।
এদিন মামলার বাদী দিলদার আহমেদের পুত্রবধূ ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। সে জন্য তার আইনজীবী সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৭ আগস্ট প্রতিবেদনের ওপর শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
উল্লেখ্য, ১১ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদের স্ত্রী ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার আবেদনে আপন রিয়েল স্টেটের উপদেষ্টা মোখলেছুর রহমানকেও আসামি করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা বলেন, সাফাতের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর শ্বশুরের পরিবারের সঙ্গে যৌথভাবে বসবাস করে আসছি। বিয়ের পর থেকে আমার শ্বশুর দিলদার আহমেদ আমাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেন। আমাকে তালাক দেয়ার জন্য সাফাতকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। তালাক না দিলে তাকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা ও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার হুমকি দেন।
বাদী উল্লেখ করেন, সাফাত বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর গত ৩১ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান। এরপর তাকে নির্যাতনের বিষয়গুলো অবহিত করি। এতে আমার শ্বশুর আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। আমি আর সাফাত একসঙ্গে বসবাস করা অবস্থায় ১৩ ফেব্রুয়ারি তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। তিনি জেলে যাওয়ার পর দিলদার আহমেদ ও তার সহযোগী মোখলেছুর রহমান আমাকে নির্যাতন করতে থাকেন।
পিয়াসা আরও উল্লেখ করেন, ৫ মার্চ (মঙ্গলবার) নিয়মিত গাইনি ডাক্তার দেখানোর অংশহিসেবে এবং সাফাতের কোর্ট হাজিরা থাকায় তাকে (সাফাত) দেখার উদ্দেশে রাত ৮টার দিকে বাসা থেকে বের হই। দুই ঘণ্টা পর কেনাকাটা শেষে বাসার গেটে প্রবেশ করা মাত্র শ্বশুর ও তার সহযোগী মোখলেছুর রহমান আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। এ সময় আমার কাছে থাকা দুই লাখ টাকা, গলায় থাকা পাঁচ ভরি স্বর্ণের নেকলেস, হাতে থাকা দুই ভরি স্বর্ণের চুড়ি ও দুইটি হীরার আংটি যার বাজারমূল্য আট লাখ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেন।
আমি বাসায় প্রবেশ করতে চাইলে শ্বশুর আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দিয়ে বলেন, এক্ষুনি বাসা থেকে বের হয়ে যা, তা না হলে গুলি করে মেরে ফেলব। আমি দুই মাসের গর্ভবতী ছিলাম। গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করার উদ্দেশে তলপেটে লাথি মারার চেষ্টা করেন এবং ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেন শ্বশুর।
পরদিন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে এলে তিনি বলেন, আমার বাড়িতে কখনো প্রবেশ করলে তোকে জানে শেষ করে দেব। এরপর চড়-থাপ্পড় মেরে আমাকে বাসা থেকে বের করে দেন।