প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে ব্যারিস্টার সুমনের রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা খারিজ
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০১৯, ০৪:৫২ এএম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম জিয়াউর রহমানের আদালতে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলার আবেদন করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
পেনাল কোডের ১২৩(এ), ১২৪(এ) ও ৫০০ ধারায় মামলাটি আমলে নেয়ার জন্য ব্যারিস্টার সুমন আদালতে আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরে আদেশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরে মামলাটি খারিজের আদেশ দেন আদালত।
এর আগে শুক্রবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন বলেন, নিজের দেশ সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে দেয়া প্রিয়া সাহার বক্তব্য মিথ্যা, বানোয়ার ও ভিত্তিহীন। তিনি সম্প্রীতির বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। এটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। যেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এ দেশকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ বলেছেন, সেখানে এ দেশের নাগরিক হয়ে ট্রাম্পের কাছে গিয়ে প্রিয়া সাহা এমন বক্তব্য দিয়েছেন। এটি রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক অপরাধ ও গভীর ষড়যন্ত্র। এ জন্য একজন আইনজীবী হয়ে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আগামী রোববার আদালত খুললেই প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করব।
প্রসঙ্গত গত ১৬ জুলাই ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার ২৭ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ১৬ দেশের প্রতিনিধি অংশ নেন। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলেন, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। বাংলাদেশে তিন কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান নিখোঁজ রয়েছেন। দয়া করে আমাদের লোকজনকে সহায়তা করুন। আমরা আমাদের দেশে থাকতে চাই।
এর পর তিনি বলেন, এখন সেখানে এক কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছে। আমরা আমাদের বাড়িঘর খুইয়েছি। তারা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, তারা আমাদের ভূমি দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বিচার পাইনি।
ভিডিওতে দেখা গেছে, একপর্যায়ে ট্রাম্প নিজেই সহানুভূতিশীল হয়ে ওই নারীর সঙ্গে হাত মেলান।
কারা এমন নিপীড়ন চালাচ্ছে? ট্রাম্পের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘দেশটির মৌলবাদীরা এসব করছে। তারা সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয় পাচ্ছে।’
প্রিয়া সাহার দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির বহু উদাহরণ সোশ্যাল মিডিয়া তুলে ধরছেন নেটিজেনরা।
প্রিয়া সাহার দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতির বহু উদাহরণ সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরছেন নেটিজেনরা। বাংলাদেশ যেখানে ধর্মীয় সম্প্রতির মডেল হিসেবে সমাদৃত হচ্ছে সেখানে বিদেশ গিয়ে প্রিয়া সাহার এমন নালিশ দেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ করছে বলেও মনে করেন তারা।