
প্রিন্ট: ৩০ মার্চ ২০২৫, ০৯:০১ এএম
বিমান ছিনতাইকারী পলাশের স্ত্রী ‘ম্যাডাম ফুলি’খ্যাত নায়িকা সিমলা

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৩:২৭ পিএম

ঢাকই ছবির চিত্রনায়িকা সিমলা ও বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী পলাশ মাহমুদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি। ছবি: পলাশের ফেসবুক থেকে
আরও পড়ুন
অবশেষে বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী যুবকের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে। ওই যুবকের নাম মো. পলাশ আহমেদ (২৬)। তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে।
তিনি বিমানের ঢাকা-চট্টগ্রাম অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী ছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব জানিয়েছে, পলাশের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামে।
গতকাল বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনায় নিহত মাজেদুলই দুধঘাটা গ্রামের পলাশ মাহমুদ তা নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁও থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, নিহতের ছবি রোববার রাত ১টার দিকে দুধঘাটা গ্রামের পিয়ার জাহানের বাড়িতে নিয়ে দেখালে তারা ছবিটি পলাশের বলে নিশ্চিত করে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ইতিমধ্যে তার বাড়িতে শত শত মানুষ ভিড় করে।
এরই মধ্যে জানা গেছে, ঢাকাই ছবির চিত্রনায়িকা সিমলার স্বামী ছিলেন এই পলাশ।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সিমলাকে বিয়ে করেন তিনি।
এ বিষয়ে যুগান্তরে গত বছরের ৫ জানুয়ারি ‘২০ বছরের কম বয়সীকে বিয়ে করলেন ম্যাডাম ফুলি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সেখানে সিমলার স্বামীর নাম জানানো হয় মাহি বি জাহান। সেই সময় সিমলার ঘনিষ্ঠজনরা গণমাধ্যমকে জানান, বিয়েতে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠজন ও বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন। সিমলার স্বামীর বাড়ি নারায়ণগঞ্জে।
সিমলার সেই স্বামী ও বিমান ছিনতাইকারী নিহত পলাশ একই ব্যক্তি। পলাশের ফেসবুক আইডির ইউজার নেম মাহি বি জাহান। যেখানে অভিনেত্রী সিমলার সঙ্গে একাধিক অন্তরঙ্গ ছবি রয়েছে।
এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর বাবা পিয়ার জাহান ও মা রীনা বেগম।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রাতের বেলা চিত্রনায়িকা সিমলাকে নিয়ে পলাশ বাড়িতে আসেন বলে জানান পিয়ার জাহান।
ছেলের থেকেই তিনি প্রথম জানতে পারেন সঙ্গে আনা মেয়েটির নাম শিমলা ও সে সিনেমার অভিনেত্রী।
পিয়ার জাহান বলেন, গত বছরের এপিলের দিকে আবার সিমলাকে নিয়ে এসে পলাশ জানায় যে, তারা বিয়ে করেছে। এ সময় শিমলাও নিজেকে পলাশের স্ত্রী বলে জানায়।
ওই রাতেই তারা আবার ঢাকায় চলে যায় বলে জানান পিয়ার জাহান।
পলাশ অবাধ্য ছেলে ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ছেলে যেন ভালো পথে ফিরে আসে সে জন্য আমরা পলাশের স্ত্রী শিমলাকে অনুরোধ করি।
চলতি মাসের শুরুতে পলাশ বাড়িতে এলে তার আচরণে অনেকটা পরিবর্তন দেখেন পিয়ার জাহান।
ছেলেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে দেখেন তিনি।
তিনি বলেন, ছেলেকে শুধরে যেতে দেখে মন খুশিতে ভরে ওঠে আমার। পলাশ আবার নামাজ পড়া শুরু করে এবং মসজিদে গিয়ে আজানও দেয়।
এখন কেমন চলছে জিজ্ঞেস করলে কাজের সন্ধানে দুবাই যাবে বলে জানায়।
পলাশ প্রসঙ্গে স্থানীয়রা জানান, পলাশ মাহমুদ তাহেরপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা থেকে ২০১২ সালে দাখিল পরীক্ষা দেয়। এর পর সে সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়।
কলেজে পড়া অবস্থায় সে ঢাকায় চলে যায় ও তার আচরণে পরিবর্তন দেখা দেয় বলে জানান স্থানীয়রা।
তারা বলেন, মাঝেমধ্যে পলাশ ঢাকা থেকে বাড়িতে আসত কিন্তু এলাকার লোকজনের সঙ্গে আগের মতো কথা বলত না, একা একা থাকত।
এসআই আবুল কালাম আজাদ জানান, যতটুকু খবর নিয়েছি পলাশ নেশাগ্রস্ত ছিল। আর নেশার কারণেই সে বিমান ছিনতাইয়ের কাজ করেছে।
স্থানীয়রা জানান, পলাশ ঢাকায় চলচ্চিত্রে কাজ করছে। মিডিয়াজগতে অনেক নায়ক-নায়িকার সঙ্গে তার মেলামেশা ছিল।