যে কারণে জোড়া খুনে রনির যাবজ্জীবন, আদালতের ব্যাখ্যা
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০১৯, ০৫:২৩ এএম
ফাইল ছবি
বহুল আলোচিত জোড়া খুনের মামলার আসামি সাবেক এমপি পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।রায়ের ব্যাখ্যায় আদালত বলেছেন আসামির শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে এ রায় দেয়া হয়েছে।
বুধবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মঞ্জুরুল ঈমাম এ রায় দেন। রনি আওয়ামী লীগের নেত্রী ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেগম পিনু খানের ছেলে।
বিচারক রায় ঘোষণার সময় বলেন, আসামিকে এই হত্যা মামলায় ৩০২ ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই ধারায় তার ফাঁসি হওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু ঘটনার সময় আসামি রনি মদ্যপ থাকায় তার মানসিক ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় এনে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে তাকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেয়া হল।
রায় ঘোষণার সময় আসামি রনি আদালতে হাজির ছিলেন।
রায়ে বলা হয়, আসামি বখতিয়ার আলম রনি ঘটনার সময় মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তার মেয়ে হাসপাতালে থাকায় তিনি বিষণ্নতায় ছিলেন। তিনি ওই সময় মদ্যপও ছিলেন। তিনি লাইসেন্সবিহীন পিস্তল দিলে মামলার ভুক্তভোগীদের গুলি করেন। তিনি জানতেন গুলি করলে তারা মারা যাবেন।
এ ঘটনায় বখতিয়ার রনি মৃত্যুদণ্ড শাস্তি হয়, কিন্তু তার (রনি) শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হলো। একই সঙ্গে ৫০ হাজার জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এর আগে ১৫ জানুয়ারি আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার এদিন ধার্য করেন আদালত। গত বছরের ২৬ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন আসামি বখতিয়ার আলম রনি।
আদালত সূত্র জানায়, গত বছরের ১০ এপ্রিল উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য ওই বছরের ৮ মে দিন ধার্য করেন।
ওই দিন আদালত এ মামলায় অধিকতর যুক্তিতর্কের প্রয়োজন থাকায় রায় ঘোষণার আদেশ প্রত্যাহার করেন এবং মামলার অধিকতর যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
অধিকতর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে পরবর্তী সময়ে রায় ঘোষণার জন্য ওই বছরের ৪ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়। আর ওই দিন আসামি রনির মোবাইলের কললিস্ট জব্দ করা হলেও ভুলক্রমে তা এক্সিবিট না করায় রাষ্ট্রপক্ষের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রায় ঘোষণা ফের পিছিয়ে যায়। এর পর আদালতের আদেশে গত বছরের ১৭ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জেরা সম্পন্ন হয়।
সূত্র আরও জানায়, ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে একটি গাড়ি থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়।
এতে অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী ও রিকশাচালক আবদুল হাকিম আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তারা মারা যান।
ওই ঘটনায় ১৫ এপ্রিল নিহত আবদুল হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ২১ জুলাই ডিবি পুলিশের এসআই দীপক কুমার দাস রনির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন।
২০১৬ সালের ৬ মার্চ এ মামলার একমাত্র আসামি এমপিপুত্র বখতিয়ার আলম রনির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন আদালত।