পুরো দেশটাই যেন অগ্নিঝুঁকিতে: জিএম কাদের
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৪, ০৬:১৮ পিএম
সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, আমাদের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। প্রমাণ হয়েছে, অগ্নি নির্বাপণে বর্তমান সক্ষমতা একেবারেই অপ্রতুল। এতে প্রতিবছর শতশত মানুষের প্রাণ যাচ্ছে ভয়াবহ আগুনে। পুরো দেশটাই যেন অগ্নিঝুঁকিতে।
তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের নির্মম বাস্তবতা থেকে জাতি মুক্তি চায়। ফায়ার সার্ভিসের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে- গেল বছর ২৭ হাজার ৬২৪টি অগ্নিকাণ্ডে ৭৯২ কোটি ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ১৪ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন ১০২ জন আর আহত হয়েছেন ২৮১ জন। যদিও সাধারণ মানুষের ধারণা এই সংখ্যা আরও বেশি।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বড় কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তথ্য তুলে ধরে জিএম কাদের বলেন, ৪ মার্চ চট্টগ্রামের কর্ণফুলি থানা এলাকায় একটি চিনি কলের আগুন পুড়ে পুড়েই নিভেছে। সেখানে অগ্নি নির্বাপণ কর্মীদের অসহায় মনে হয়েছে। গেল ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রীণ কোজি কটেজে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন ৪৬ জন। মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন আরও কয়েকজন। ২০১০ সালের ৩ জুন রাতে চানখারপুলের নিমতলীতে কেমিক্যালের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অর্ধশত এবং কারখানা ও বাড়ি পুড়েছে ২৩টি। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজারের চুরিহাট্টা এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন মারা যায়। আহত হয়েছেন কয়েকশ মানুষ। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ দুপুরে বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে মারা যায় ২৬ জন, আহত হয়েছে অন্তত ৭০ জন। ২০২১ সালের ২৭ জুন সন্ধ্যায় মগবাজারের রাখি নীড়ে অগ্নিকাণ্ডে মারা যায় ১২ জন, আহত দুই শতাধিক। ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডে ১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ২২৬টি দোকান পুড়ে ক্ষতি হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকার।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, শুধু অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ ও সম্পত্তি হানি হচ্ছে তাই নয়। এদেশের মানুষ আজ কোথাও নিরাপদ নেই। দুর্ঘটনা নিত্তনৈমত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রেলে কাটা পড়ে মৃত্যু, লঞ্চ দুর্ঘটনায় পানিতে ডুবে মারা যাওয়া হরহামেশাই ঘটছে। সড়ক দুর্ঘটনার ফিরিস্তি ও এতে হতাহতের সংখ্যা প্রতিদিনই নতুন উচ্চতায় উঠছে। দুর্ঘটনা এখন স্বাভাবিক ঘটনায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, এর প্রধান কারণ হচ্ছে- সুশাসনের অভাব। জবাবদিহিতা নেই কোনো স্তরে। দুর্নীতির বিস্তার হচ্ছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। কারোরই নিয়ম-কানুন মানার প্রয়োজন নেই যদি ক্ষমতা বা অবৈধ অর্থের জোগান থাকে।
তিনি আরও বলেন, কোনো ভালো কিছু ঘটলে তার কৃতিত্ব নেওয়ার ও দেওয়ার লোকের অভাব নেই। দুর্ঘটনার জন্য কেউই দায় নিতে চায় না। একে অন্যের ঘারে দোষ চাপিয়ে সময়ক্ষেপন করা হয়। তাই দুর্ঘটনা আবার স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে অন্য কোথাও ঘটতে শুরু করে।