‘দুর্নীতি-ব্যাংক লুট-টাকা পাচার সরকারের সব অর্জন ম্লান করে দিচ্ছে’
সংসদ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:২৯ পিএম
জাতীয় পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ঘুষ-দুর্নীতি-অনিয়ম-ব্যাংক লুট-টাকা পাচার বর্তমান সরকারের সব অর্জন ম্লান করে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার অনেক উন্নয়ন করেছে। এই সরকার এত এত উন্নয়ন করেছে, যা বলে শেষ করা যাবে না। কিন্তু একই সঙ্গে ব্যাংক লুট, অর্থপাচারের কারণে এসব উন্নয়ন ঢাকা পড়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী যদি এখনই এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা না নেন, তাহলে বর্তমান সরকারের ইমেজ পুনরুদ্ধার করা কঠিন হয়ে যাবে।
জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে মঙ্গলবার মুজিবুল হক চুন্নু এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে নজিরবিহীন লুটপাট হচ্ছে। ভুয়া নাম ঠিকানা দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নেওয়া হচ্ছে।
একটি ব্যাংকের নাম উচ্চারণ করে তিনি বলেন, কেবল নভেম্বরেই এই ব্যাংক থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে লুট করা হয়েছে। আরও অনেক ব্যাংক থেকে এভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার নামে লুট করা হয়েছে। এসব টাকা পাচার করা হয়েছে।
বিরোধী দলের এই সংসদ সদস্য বলেন, বর্তমান রাষ্ট্রপতি একজন ভালো মানুষ। তিনি সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি। দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি বিদায় নেবেন। কিন্তু এ দেশে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে বিদায় নেওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও শ্রীলংকায় বিদায় নেওয়ার পর সাবেক রাষ্ট্রপতিকে নানারকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। আমাদের এখানেও এরকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দাবি জানাই। প্রয়োজনে এ জন্য আইনও করা যেতে পারে।
পাঠ্যপুস্তকের নানা ভুলভ্রান্তি তুলে ধরে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, শিক্ষামন্ত্রীকে আমি পছন্দ করি। কিন্তু পাঠ্যবইয়ে যেসব ভুল তথ্য সন্নিবেশিত করা হয়েছে, তা দুঃখজনক। আশা করি দ্রুত এসব ভুলভ্রান্তি দূর করা হবে।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আরও অসহনীয় হয়ে উঠবে। বেশি দাম দিয়ে আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নু বলেন, বেশি দাম দিয়ে ভারতের বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কার স্বার্থে কেনা হচ্ছে- এটা আমি জানতে চাই।
সড়ক দুর্ঘটনার ভয়াবহ চিত্রের বর্ণনা করে তিনি বলেন, আমাদের সড়কে কোনো শৃঙ্খলা নেই। লাইসেন্স নেই, অদক্ষ চালক-চলাচলে অযোগ্য ফিটনেসবিহীন গাড়িতে সয়লাব সড়ক। দেখার কেউ নেই।
জনশক্তি রপ্তানিকারদের সংগঠন বায়রা নিয়ে তিনি বলেন, মালয়েশিয়া লোক পাঠানোর জন্য ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বাকিদের কেনও অনুমতি দেওয়া হবে না। সবারই তো বৈধ লাইসেন্স আছে। তাহলে কাদের স্বার্থ রক্ষায় ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এটা জানা জরুরি।