
প্রিন্ট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৬ এএম
মিয়ানমারে উদ্ধারকারী দলের ত্রাণ হস্তান্তর
উদ্ধারকারী দলসহ আটক নাগরিকদের নিয়ে দেশে ফিরেছে নৌবাহিনী জাহাজ

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৪ পিএম

আরও পড়ুন
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মায়ানমারে তৃতীয় ধাপে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা হস্তান্তর করেছ মঙ্গলবার দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’। সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে পাঠানো ৫৫ সদস্যের উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তাকারী দলকে দেশে ফেরত আনা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারে আটকে পড়া ২০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নিয়ে এসেছে নৌবাহিনী।
মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে ১২০ টন ত্রাণসামগ্রী যথাযথ প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর শেষে ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’ বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে গত ১৩ এপ্রিল মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন বন্দর ত্যাগ করে। এর আগে মিয়ানমারে পাঠানো উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তাকারী দল তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করে জাহাজে আরোহণ করে।
এদিকে গত ৩০ মার্চ ও ১ এপ্রিল বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, অসামরিক চিকিৎসক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সমন্বয়ে ৫৫ সদস্যের উদ্ধারকারী ও চিকিৎসা সহায়তাকারী দল মিয়ানমারে প্রেরণ করা হয়। তারা ধসে পড়া ভবন ক্লিয়ারিং, উদ্ধার এবং জটিল অস্ত্র পাচারসহ দুর্যোগপীড়িত মানুষের সেবায় কাজ করে। বর্তমানে মিয়ানমারে ভূমিকম্প ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ায় নৌবাহিনীর জাহাজযোগে তাদের নিরাপদে দেশে নিয়ে আসা হয়। মানবিক বিপর্যয়ে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় সে দেশের সরকার ও জনগণ বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারে আটক থাকা ২০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’ জাহাজ এর মাধ্যমে দেশে নিয়ে আসে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। তারা প্রায় ০২ বছর যাবৎ মানব পাচারের শিকার হয় মিয়ানমারে আটক ছিল। জানা যায়, উন্নত রাষ্ট্রে প্রেরণ ও চাকরির প্রলোভনে পাচারকারী চক্রের কবলে পড়ে তারা মিয়ানমারে গমন করে। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটককৃত আঠারো বছরের কম বয়সী তরুণদের কিশোর সংশোধনাগারে রাখা হয়। আটক হওয়ার পর থেকেই তাদের প্রত্যাবাসনে দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা চলে। তবে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী মিয়ানমারে পৌঁছালে আটককৃত নাগরিকদের প্রত্যাবাসন আলোচনায় ইতিবাচক সাড়া মেলে। সেখানে বাংলাদেশ নৌবাহিনী মিয়ানমারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে।
সেক্ষেত্রে উভয় দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যকার আলোচনায় দুই দেশ সমঝোতায় উপনীত হয়। ফলে দীর্ঘ দিন আটক থাকা বাংলাদেশি নাগরিকরা মুক্তি পায়। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের পারস্পরিক সহযোগিতায় প্রত্যাবাসন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় মুক্তিপ্রাপ্ত নাগরিকদের মঙ্গলবার নিরাপদে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। প্রত্যাবাসন সম্পর্কিত কার্যক্রম শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হস্তান্তর করা হবে।