স্বাগতম মাহে রমজান
ইবাদতের ভরা মৌসুম শুরু হলো

মুফতি আব্দুল মালেক
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

রমজানুল মোবারক বান্দার জন্য আল্লাহতায়ালার অনেক বড় নেয়ামত। এ মাসের দিবস-রজনিকে আল্লাহতায়ালা খায়ের ও বরকত দিয়ে পূর্ণ করে রেখেছেন। তাকওয়া অর্জনের অনুশীলনে এবং ইবাদত-বন্দেগি ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সব আমলের জন্য ভরা বসন্ত বানিয়েছেন। এ মাস শুধু একটি মাসই নয়; বরং গোটা বছরের জন্য এটা তাপকেন্দ্র। এ মাস থেকেই মুমিন গোটা বছরের তাকওয়া-তাহারাতের সঞ্চয় গ্রহণ করে। গোটা বছরের ইমানি প্রস্তুতি এ মাস থেকেই গ্রহণ করে। হাদিস শরিফের ভাষায়- ‘আল্লাহতায়ালার কসম! মুসলমানদের জন্য এরচেয়ে উত্তম মাস আর নেই এবং মুনাফিকদের জন্য এর চেয়ে ক্ষতির মাসও আর নেই। মুসলমান এ মাসে (গোটা বছরের জন্য) ইবাদতের শক্তি ও পাথেয় সঞ্চয় করে।’ আরও বলেছেন, এ মাস মুমিনের জন্য গনিমত এবং মুনাফিকের জন্য ক্ষতির কারণ। (মুসনাদে আহমদ ২/৩৩০; মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৩/১৪০)।
আল্লাহতায়ালা যেমন রমজানকে খায়ের ও বরকত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য অর্জনের মৌসুম বানিয়েছেন তেমনই গোটা বছরের ইমানি কুওয়ত হাসিলের কেন্দ্র বানিয়েছেন। এরই সঙ্গে আরও অনুগ্রহ করেছেন যে, এ মাসে সৃষ্টিজগতে এমন অনেক অবস্থা ও পরিবর্তনের সূচনা করেন, যা গোটা পরিবেশকেই খায়ের ও বরকত দিয়ে ভরপুর করে দেন। হাদিস শরিফে এসেছে, এ মাসে আল্লাহর হুকুমে জান্নাতের সব দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের সব দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বড় বড় জিন ও শয়তানকে বন্দি করা হয় এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে এক ঘোষক ঘোষণা করতে থাকেন-‘হে কল্যাণ-অন্বেষী, অগ্রসর হও, হে অকল্যাণের পথিক, থেমে যাও।’
এসবের প্রভাবে রমজান মাসে চেতনে বা অবচেতনে বান্দা ভালো কাজের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। সৌভাগ্যশালী ওইসব ব্যক্তি, যারা এ আসমানি প্রেরণাকে মূল্য দেয় এবং হিম্মতের সঙ্গে কর্মের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
মনে রাখা উচিত, প্রকৃতপক্ষে রমজান হলো, আখিরাতের তিজারতের মৌসুম। এ মাসের সময়গুলো খুব বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা উচিত। অন্তত ফরজ রোজা এবং সুন্নতে মুয়াক্কাদা তারাবি, সেহরির সময় তাহাজ্জুদ, কিছু পরিমাণে হলেও জিকির ও তেলাওয়াত প্রত্যেকেরই করা উচিত। বাজারের ব্যবসা-বাণিজ্যে এতখানি মগ্ন হওয়া উচিত নয় যে, ফরজ নামাজের জামাত ও তারাবি ছুটে যায়। এছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যে ধোঁকাবাজি ও প্রতারণা এবং সুদ ও জুয়াসহ অন্য সব হারাম কার্যকলাপ থেকে তো সারা বছরই বেঁচে থাকা ফরজ, রমজান মাসে এর অপরিহার্যতা আরও বেড়ে যায়। কেননা, বরকতপূর্ণ সময়ের গুনাহও অত্যন্ত কঠিন ও ধ্বংসাত্মক হয়ে থাকে।
লেখক : খতিব, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম