জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুলিতে আহত
খোকনের মুখ পুনর্গঠন করতে পাঠানো হচ্ছে রাশিয়ায়

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৫৫ পিএম

গত ৫ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খোকন চন্দ্র বর্মণ। গুলির আঘাতে তার মুখের একটি বড় অংশ হাড়সহ নষ্ট হয়ে যায়। খোকন চন্দ্র বর্মণের ঠোঁট, মাড়ি, নাক, তালু— এগুলোর এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। এখন তার মুখ পুনর্গঠন করবে রাশিয়া।এ জন্য শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোররাত ৪টা ২৫ মিনিটে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তাকে দেশটিতে পাঠানো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আঘাতের ধরন গুরুতর এবং আহত খোকনের মুখ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল।এ জন্য তার চিকিৎসার ব্যাপারে বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করা হলে তাদের অপারগতার প্রেক্ষিতে দীর্ঘ চেষ্টার একপর্যায়ে এ বিষয়ে দক্ষ রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর ইউনিভার্সিটি ক্লিনিক অব লোমোনোসোভ হাসপাতাল খোকনের মুখ পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জটি নিতে সম্মত হয়েছে।তারই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাশিয়ায় প্রশিক্ষিত সার্জন ডা. মো. মাহমুদুল হাসানসহ আগামীকাল (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোররাত ৪টা ২৫ মিনিটে কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে খোকন চন্দ্র বর্মণকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাশিয়া পাঠানো হচ্ছে।
এতে বলা হয়, খোকনকে প্রাথমিকভাবে ওই হাসপাতালে প্রাক মূল্যায়ন করা হবে এবং থ্রি-ডি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তার চেহারাকে পূর্বের অবস্থায় ফেরত আনার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি মডেল দ্বার করানো হবে। মডেল অনুযায়ী চেহারা পুনর্গঠনের জন্য মূল সার্জারি ২০ মার্চ বা তার কাছাকাছি সময়ে শুরু হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে কর্মকাণ্ড অব্যাহত আছে, তারই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে ৩৮ জন আহতকে সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আহতদের মধ্যে ৩ জন চিকিৎসা শেষে ফিরে এসেছেন। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, আহতদের মধ্যে যাদের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান আছে।
এতে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জুলাই আন্দোলনে আহত ১৪০০০-এর অধিক ছাত্র-জনতাকে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে।এ ছাড়া ৬টি দেশ (থাইল্যান্ড, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুর) থেকে আসা বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা হাজারের অধিক আহতদের চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার মূল্যায়ন করেছেন। ক্ষেত্র বিশেষে তারা আন্দোলনে আহতদের ওপর সার্জারি করেছেন।