দিল্লিতে বিএসএফ-বিজিবি সম্মেলন
সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামানোর জোরালো দাবি বাংলাদেশের

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:৪১ পিএম

সীমান্ত হত্যা বন্ধে কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ। নয়াদিল্লিতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এবং বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিজিবির মধ্যকার সীমান্ত সম্মেলনে হত্যা পুরোপুরি বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে ঢাকার পক্ষ থেকে।
বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, সীমান্তে অপরাধীদের প্রচলিত আইনে শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে সরাসরি গুলি করে হত্যা মানবিকতার পরিপন্থি। এ ইস্যু বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর।
জবাবে বিএসএফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে সীমান্তে প্রাণহানি এড়াতে। তবে কখনো কখনো সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র এমন আক্রমণাত্মক আচরণ করে যে, পরিস্থিতি সামাল দিতে গুলি চালানো ছাড়া উপায় থাকে না। এ ধরনের ঘটনা রোধে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার ওপর জোর দিয়েছে ভারত।
দিল্লির লোদি রোডের সিজিও কমপ্লেক্সে বিএসএফ সদর দপ্তরে সোমবার থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনের শেষ দিন বৃহস্পতিবার। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। অন্যদিকে বিএসএফের মহাপরিচালক দলজিৎ সিং চৌধুরীর নেতৃত্বে ভারতের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নিয়েছে।
সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা ছাড়াও বিজিবি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার বিষয়ে। বিজিবি অভিযোগ করেছে, কিছু এলাকায় যৌথ জরিপ ছাড়াই বিএসএফ একতরফাভাবে বেড়া নির্মাণ করছে। এতে সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে।
সম্মেলনে হত্যা বন্ধ, চোরাচালান নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বিজিবি প্রতিনিধিদের সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করে বিএসএফ। তবে অন্যবারের তুলনায় এবার সফরের সময় কমানো হয়েছে। সাধারণত ৫-৬ দিন ধরে সম্মেলন চললেও এবার তা ৪ দিনে সীমিত রাখা হয়েছে। আগের মতো সফরকারী প্রতিনিধিদের ভারতীয় দর্শনীয় স্থান ঘুরিয়ে দেখানোর ব্যবস্থা এবার রাখা হয়নি।
সম্মেলনে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবি সদর দপ্তরে জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘এ মুহূর্তে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়ার কিছু নেই।’
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা, বিএসএফের অনধিকার প্রবেশ ও বেআইনি কার্যক্রম নিয়ে কড়া ভাষায় কথা বলেছে বিজিবি। গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এটিই দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে প্রথম শীর্ষ পর্যায়ের সম্মেলন।
এর আগে ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশের কড়া অবস্থান সম্পর্কে ইঙ্গিত দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশের কথার ‘টোন’ হবে আলাদা। ভারতকে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।