দুবাই সামিটে ড. ইউনূস
যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন, ডিসেম্বরেও হতে পারে

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তার সরকার যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করবে। এটা এ বছরের ডিসেম্বরেও হতে পারে। বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে যোগ দিয়ে এক অধিবেশনে তিনি একথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সাংবাদিক বেকি অ্যান্ডারসন অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন।
বেকি অ্যান্ডারসনের প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা ১৫টি বিভিন্ন খাতের জন্য সংস্কার কমিশন গঠন করেছি। আইনশৃঙ্খলা, পুলিশ, সংবিধান, নির্বাচনসহ অন্যান্য সংস্কার কমিশনগুলো প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তারা বিভিন্ন ধরনের সুপারিশ করছে। এখন আমরা যেটা করব তা হলো ঐকমত্য গঠন। আমরা এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসছি। যেসব সুপারিশের বিষয়ে সবাই একমত পোষণ করবে, সেগুলো নিয়ে আমরা একটা ‘সনদ’ তৈরি করব। আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করে নির্বাচন দেব। যত দ্রুত সম্ভব আমরা নির্বাচন দেব। এটা এ বছরের ডিসেম্বরেও হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের সবকিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমরা একটু একটু করে সব গুছিয়ে নিচ্ছি। এই হলো আমাদের অবস্থা। অর্থনীতি, সমাজ, প্রশাসন সবকিছু ভেঙে পড়েছিল। আমাদের কাজ এই সবকিছু পুনর্গঠন। যেমন, ব্যাংকিং ব্যবস্থা পুরোপুরি ধসে গিয়েছিল। ব্যাংকগুলো থেকে ১৬ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়ে গেছে। আমাদের রিজার্ভ তলানিতে চলে গেছে। প্রথমত অর্থনীতি, দ্বিতীয়ত আইনশৃঙ্খলা। এরপর প্রতিষ্ঠানগুলো
ঠিক করতে হবে। নির্বাচন শেষে আরও কিছু সময় নেতৃত্বে থাকার ইচ্ছা সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, আমি এটা আগেও স্পষ্ট করে বলেছি। নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর আমি যে কাজে ছিলাম, সেখানেই ফিরে যাব। কারণ আমি সে কাজেই আনন্দ পাই।
ইলন মাস্কের সঙ্গে ড. ইউনূসের ভিডিও কনফারেন্স, স্টারলিংক নিয়ে আলোচনা : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শীর্ষ মার্কিন ব্যবসায়ী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইলন মাস্কের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় প্রধান উপদেষ্টা ও ইলন মাস্কের মধ্যে কথা হয় বলে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবদুল কালাম আজাদ মজুমদার তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন। বাসস এ খবর জানায়। এদিকে রাতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা চালু এবং আরও সম্ভাবনার ক্ষেত্র উন্মোচনের বিষয়ে উভয়ের আলোচনা হয়েছে।
এ সময় তারা আলোচনা করেন কিভাবে উচ্চগতির এবং কম খরচের ইন্টারনেট সংযোগ ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোতে স্টারলিং সেবা চালু হলে এটি লাখো মানুষর জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং দেশকে বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতির সঙ্গে আরও নিবিড়ভাবে সংযুক্ত করতে সক্ষম হবে। তিনি বাংলাদেশে প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ বিনির্মাণে ইলন মাস্কের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, স্টারলিংক গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণফোনের একটি সম্প্রসারণ হতে পারে, যেটি গ্রামীণ নারী ও যুবকদের বিশ্বের সঙ্গে সংযোগের ক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে।
ইলন মাস্ক দারিদ্র্য বিমোচনে ড. ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের মাইক্রো ফাইন্যান্স মডেলের প্রশংসা করেন। ড. ইউনূস স্টারলিংক চালুর লক্ষ্যে ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।