ফাইল ছবি
বাজারে ইলিশের মূল্য এখনো চড়া। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪শ থেকে ১৭শ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে মাত্র ৬০০ টাকা কেজিতে ইলিশ মাছ বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন।
সাধারণ মানুষ যাতে ইলিশ মাছের স্বাদ নিতে পারে তার জন্যই সরকারের এমন উদ্যােগ বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তবে ৬০০ টাকা কেজিতে ইলিশ বিক্রি শুরুর খানিকটা পরেই স্বাদের ইলিশ বিক্রি শেষ হয়ে যায়। মাত্র ২০ জন ক্রেতা এ দামে ইলিশ কিনতে পেরেছেন।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) সুরাইয়া আখতার জাহানের সভাপতিত্বে রোববার দুপুরে কারওয়ান বাজারে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
উপদেষ্টা জানান, প্রাথমিকভাবে সাড়ে চারশ থেকে সাড়ে আটশ গ্রাম ওজনের ইলিশগুলো ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রচলিত বাজারে ইলিশের দাম কমানো কঠিন। তাই মধ্যস্বত্বভোগীদের দূরে রেখে সরকার এমন উদ্যােগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।
ভবিষ্যতে এমন কার্যক্রমের পরিধি আরও বাড়ানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, জনসাধারণ যেন ইলিশ মাছ খেতে পারে, সেটা যেন তাদের ক্রয় সীমার মধ্যে রাখা যায় সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। এটা খুবই ক্ষুদ্র উদ্যোগ। জানি আপনারা সবাই সন্তুষ্ট হতে পারবেন না। আমরা এটুকুর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকব না, আরও বেশি কিভাবে দিতে পারি সেই চেষ্টা করে যাব।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বাজারে মধ্যস্বত্বভোগী কমলে ইলিশের দাম কমানো সম্ভব। বাজারে যে ব্যবস্থা আছে, তাতে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের দাম কমানো কঠিন। তবে আমরা প্রমাণ রাখতে চাই, মাছ ধরার উৎস থেকে সরাসরি যদি বিক্রয়ের জায়গায় আনতে পারি, তাহলে এটার দাম কমানো সম্ভব। আমরা বাজারের মধ্যস্বত্বভোগী কমানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে চাই।’
উদ্বোধনের পর ২০ জন ক্রেতা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার হাত থেকে মাছ ক্রয়ের সুযোগ পেয়েছেন। ক্রেতারা জানান, বাজারে অনেক বেশি দাম হওয়ায় সবশেষ কবে ইলিশ কিনেছেন তাদের মনে নেই।এখন কম দামে ইলিশ কিনতে পেরে তারা খুশি। তবে যারা কমমূল্যে ইলিশ কিনতে পারেননি- তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, এমন উদ্যোগ যেন আরও বহুগুণ বাড়ানো হয়। শুধু লোক দেখানো যাতে না হয়। সাধারণ মানুষ যাতে কমমূল্যে ইলিশ কিনতে পারে- সেই ব্যবস্থা যেন অন্তর্বর্তী সরকার করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এনাম চৌধুরী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, বিএফডিসির পরিচালক (অর্থ) অদ্বৈত চন্দ্র দাস, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে হাবিবা, বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক তাইসির খান, অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি আবিদ হোসেন, ফিস ফার্ম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (ফোয়াব) সভাপতি মোল্লা সামছুর রহমান শাহীন প্রমুখ।
পরে উপদেষ্টা বিএফডিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ইলিশ মাছ বিপণন কর্মসূচি বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) এবং বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন। এই কার্যক্রমের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়-ইলিশ কিনে হোন ধন্য’।