Logo
Logo
×

অন্যান্য

বিডিআর হত্যাকাণ্ড: স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রথম বৈঠক

প্রয়োজনে বিদেশে গিয়ে ‘পলাতকদের’ জিজ্ঞাসাবাদ করবে কমিশন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩১ পিএম

প্রয়োজনে বিদেশে গিয়ে ‘পলাতকদের’ জিজ্ঞাসাবাদ করবে কমিশন

প্রায় ১৬ বছর আগের চাঞ্চল্যকর বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশন প্রথম বৈঠক করেছে।বৃহস্পতিবার সকালে পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন কমিশনের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান।

কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন, তাদের অনেকেই ৫ আগস্টের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করা হবে।সেটি সম্ভব না হলে ওই দেশে গিয়ে তাদের (যারা পালিয়েছেন) বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে কমিশন নিরপেক্ষ ও নির্মোহভাবে কাজ করে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চিহ্নিত করবে এবং দালিলিক প্রমাণের ভিত্তিতে মতামত দেবে।

তিনি বলেন, ‘এটা (তদন্ত কমিশন) কিন্তু অন্য কমিশনের মতো নয়। এটা অন্য রকম কমিশন, যেখানে দেশি-বিদেশি শক্তি ও ষড়যন্ত্রকে চিহ্নিত করতে আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা কোনো দেশকে আইডেনটিফাই (চিহ্নিত) করতে চাই না। নিরপেক্ষ ও নির্মোহভাবে আমরা অগ্রসর হতে চাই। সেটা করতে গিয়ে যারা দালিলিকভাবে, সারকামস্ট্যান্সিয়াল এভিডেন্সের (পারিপার্শ্বিক প্রমাণ) ভিত্তিতে দায়ী হবেন এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেভাবে ঘটনা এসেছে, সেভাবে মতামত দেব। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা যেহেতু বলা হয়েছে, তাতে আমাদের দেশের অনেকেই হয়তো এই কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে। এসব ব্যক্তি ৫ আগস্টের বিপ্লবের পর দেশ থেকে চলে গেছেন। তারা কোথায় আছেন, কোন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন- এসব দেশের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করব। প্রয়োজন হলে আমরা ওই দেশের সঙ্গে আলোচনা করে যাদের ফেরানো না যায়, তাদের বক্তব্য নিতে সে দেশে টিম পাঠাব।’

এ সময় কমিশনের সভাপতি (চেয়ারম্যান) মর্যাদা সরকারের একজন উপদেষ্টার সমমানের হতে হবে জানিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমি বলেছি, এই কমিশনের যিনি সভাপতি, তার মর্যাদা হতে হবে একজন অ্যাডভাইজারের (উপদেষ্টা) সমান। কারণ, আমাদের ডিল করতে হবে দেশি-বিদেশি মানুষের সঙ্গে। কাজেই সমমর্যাদায় থেকে যেন আমরা ডিল করতে পারি। যারা সদস্য (কমিশনের) রয়েছেন, তাদের সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতির মর্যাদায় অভিষিক্ত করার আবেদন জানাব। এগুলো হওয়ার পরেই পরবর্তী বৈঠক (কমিশনের) করা হবে। সেদিনই বক্তব্য নেওয়া শুরু হবে।’

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে গঠিত স্বাধীন কমিশন কোনো কিছুতেই প্রভাবিত হবে না বলেও উল্লেখ করেন তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বুদ্ধি, বিবেচনা, প্রজ্ঞার ওপর নির্ভর করে নিরপেক্ষভাবে আমরা এই তদন্ত নির্ধারিত সময়ে শেষ করার ঐকান্তিক চেষ্টা করব। এই কমিশন কোনো কিছু দ্বারা প্রভাবিত হবে না, এটার নিশ্চয়তা আমি আপনাদের দিতে পারি।’

এ সময় কমিশনপ্রধান ফজলুর রহমানের কাছে এক সাংবাদিক জানতে চান- বিজিবির সাবেক এক মহাপরিচালককে দেশত্যাগে বাধা দেওয়া হয়েছে, যিনি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তদন্ত কমিশন কারও দেশত্যাগে বিধিনিষেধ আরোপ করছে কি না?

জবাবে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা নিয়ে আলোচনা করব। যদি আমরা মনে করি, তদন্তের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, জাতির স্বার্থে কারও দেশে অবস্থান করা প্রয়োজন, সে ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর পিলখানায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের গত ১৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে অভিযোগ করা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম