Logo
Logo
×

জাতীয়

‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগে ছেয়ে গেছে ফেসবুক

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৮ এএম

‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগে ছেয়ে গেছে ফেসবুক

‘উই আর নাহিদ’ (আমরাই নাহিদ) হ্যাশট্যাগে ছেয়ে গেছে ফেসবুক। লাল ব্যাকগ্রাউন্ডের উপর #WeAreNahid লিখে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলামের পাশে দাড়ানোর বার্তা দিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীসহ অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।

রিফাত রশিদ, মো. আবু বাকের মজুমদার, আবদুল কাদেরসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন সমন্বয়ক এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভা বিকালে, থাকছেন কেন্দ্রীয় সকল সমন্বয়ক

নাহিদ ইসলামের ব্যাপারে কয়েকটি অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কে বা কারা এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন। মূলত এ কারণেই ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক মাধ্যমে এই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছেন তার অনুসারী, ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীরা।

সম্প্রতি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (এনআইবি) মহাপরিচালক পদের নিয়োগপত্রে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সুপারিশসহ সই করা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। নাহিদ ইসলাম এ বিষয়টিকে অসত্য এবং বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন।

মঙ্গলবার রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিষয়টি নিয়ে পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ১৫ অক্টোবরের নিয়োগ ২২ অক্টোবরই বাতিল করা হয়েছিল। সুপারিশকৃত গোপন নথির ছবি যারা পেয়ে যায় তাদের কাছে বাতিলকৃত প্রকাশ্য নোটিশটি অজানা থাকার কথা না। তারপরও যেকোনো মূল্যে অসত্য প্রচার করে বিতর্কিত করাটা এই সময়ের রাজনীতি।

অন্তর্বর্তী সরকার কি শিক্ষার্থীদের কোনো বার্তা দিচ্ছে?

তিনি আরও লিখেছেন, মূলত আওয়ামী বিরোধী ও আন্দোলনের পক্ষের একটি গ্রুপ এই ব্যক্তির সুপারিশ করেছিল। পরবর্তীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা উনার একাডেমিক এক্সেলেন্সি দেখে এনআইবি পদে নিয়োগ দেন। কিন্তু ঐ ব্যক্তির রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড জানার পরে সঙ্গে সঙ্গেই উনার নিয়োগ বাতিল করা হয়। গত মাসের ঘটনা। বাতিল করার ঘোষণাটিও সকলে অবগত আছেন।

এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. আবু সাদিক কায়েম লিখেছেন, আমরা জুলাইয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছিলাম। নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ যেহেতু ফ্রন্টলাইনে ছিল ফ্যাসিস্টের প্রথম টার্গেটও তারাই এবং এখনো আছে। তাদের নিবেদিত লড়াই— নিশ্চিত কাঠগড়া কিংবা মৃত্যু জেনেও আপোষহীন রাজপথ আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত করেছে।

সাদিক আরও লিখেছেন, মানুষ সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হয় না। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে ছাত্র নেতৃত্ব এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি যেটার জন্য হেনস্তার শিকার হতে হবে। আমরা চাই— রাষ্ট্রের ইতিবাচক সংস্কার ও নতুন রাজনৈতিক মীমাংসা। ছাত্র নেতৃত্ব আস্থা হারানোর মতো কোনো সিদ্ধান্তও নেয়নি।

এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চলমান হল আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে নাহিদ ইসলামকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’ বলে স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে সচিবালয়ের সামনে ছিলেন উপদেষ্টা নাহিদ।

শিক্ষার্থীরা জানান, এই স্লোগান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই দিয়ে আসছিলেন। মূলত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে এই স্লোগান দেওয়া হয়েছে। নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ্য করে নয়। তারা জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চান তাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন হোক। এ জন্যই ‘আর্মি হবে ঠিকাদার’ বলা হয়েছে।

এক ফেসবুক পোস্টে আকরাম হোসাইন রাজ ‘উই আর নাহিদ’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে লিখেছেন, সরাসরি সম্মুখে উচ্চস্বরে ‘সব শালারা বাটপার’ বলার স্বাধীনতা আনার জন্যই নাহিদরা বারবার নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের নাহিদ ইসলাম ভাই।

কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কাফি লিখেছেন, ডিবি অফিসে পিছন সাইট লাল নাহিদ ভাইয়েরই হয়েছিল। ডিবি হারুনের বানানো স্ক্রিপ্ট প্যান্ট পরেও পড়তে পারেনি সে। লুঙ্গি পরে পেপার হাঁটুর উপরে রেখে বানানো স্ক্রিপ্ট পড়েছিল নাহিদ ইসলাম।

ছাত্র আন্দোলনে অ্যাক্টিভিস্ট আশরেফা খাতুন তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, বড় ভাই নাহিদ ইসলামকে ভরসা করি। ভাইয়ের ভুলত্রুটির সমালোচনা আমরাই করবো, কিন্তু ষড়যন্ত্র করতে দেব না কাউকে। আমি যদি এই আন্দোলনে কাউকে সামনে থেকে দেখে সাহস পেয়ে থাকি সেটা নাহিদ ভাই। পূর্ণ আস্থা রাখছি উনার উপর।

আরেকজন লিখেছেন, সমন্বয়করা ভুল করবে। আমরা সেই ভুলের সমালোচনা করবো। কিন্তু তাদের পুরো জাতির শত্রু বানানোর চেষ্টা করবেন না। ছাত্রলীগের পাতানো ফাঁদে পা দিবেন না। একে একে সকল সমন্বয়ককে টার্গেট করছে তারা। স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। দেশের স্বার্থে নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকি। ষড়যন্ত্রকারীদের সকল প্রকার ষড়যন্ত্র রুখে দিব ইনশাল্লাহ। নাহিদরা হেরে গেলে আমরাও হেরে যাবো।


Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম