Logo
Logo
×

অন্যান্য

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

উত্তরায় ২৮ শহিদের নাম প্রকাশ

Icon

উত্তরা পশ্চিম (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম

উত্তরায় ২৮ শহিদের নাম প্রকাশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার চালানো নির্মম গণহত্যায় ২৮ শহিদের পরিচয় প্রকাশ করেছে ‘চব্বিশের উত্তরা’ নামের স্থানীয় একটি সংগঠন। 

শনিবার সকালে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টর মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ সময় শহিদদের নামের তালিকা জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও শহিদ মীর মাহফুজুর রহমার মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান মুগ্ধর হাতে তুলে দেওয়া হয়।

উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদরা হলেন- মো. সাইফুল ইসলাম (৪৯), মো. আসাদুল্লাহ, ওমর আবছার (২২), রানা তালুকদার (৩২), মো. আলী হোসেন (৪৩), মো. জুবায়ের ব্যাপারী (৪২), মো. আব্দুন নুর (২৯), মো. নাজিম উদ্দিন (৪২), জাবির ইব্রাহিম (৬), মো. তাজুল ইসলাম (৫৮), আব্দুল কাদির (৪১), মো. রবিউল ইসলাম (২৯), হাফেজ মো. জসীম উদ্দিন (৩৫), মো. জসিম (২৯), মো. কবির (৪৯), আব্দুল বিন জাহিদ (১৬), মো. মাহমুদুল হাসান রিজভী (২০), মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ (২৬), রাহাত হোসাইন শরিফ (১৬), নাঈমা সুলতানা (১৮), জাহিদুজ্জামান তানভীন, মো. সাইফুল ইসলাম (৩০), মো. সাগর গাজী (২০), সাব্বির হোসেন, ফাহমিন জাফর, পারভেজ শাকিল ও মাহমুদুর রহমান খান সোহেল। এছাড়া উত্তরার আন্দোলনে অংশ নেওয়া আহত ১৯৭ জনের তালিকা তুলে দেওয়া হয় জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান মুগ্ধর হাতে।

সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা জানান, শহিদ তালিকার ১৯ জনই ছাত্র এবং বাকিরা পেশায় ছোটখাটো ব্যবসায়ী, দর্জি, গাড়িচালক, নিরাপত্তাকর্মী, রেস্টুরেন্টকর্মী, শিক্ষক, মোটর পার্টস মেকানিক, শ্রমিক, ফল বিক্রেতা, দোকান মালিক, রংমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি, দিনমজুর, ইমাম, গার্মেন্ট শ্রমিক, গৃহশ্রমিক, দারোয়ান, অটোরিকশাচালক। এদের বেশির ভাগই পুলিশের ছোড়া গুলি ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় শহিদ হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা অধিকাংশই উত্তরার বিএনএস সেন্টার, আজমপুর ও উত্তরা পূর্ব থানার সামনে বেশি হতাহতের শিকার হন।

সম্মেলনে চব্বিশের উত্তরা সংগঠনের সদস্য মনীষা মাফরুহা বলেন, বুলেটে হতাহতের সংখ্যা ১০৯ জন, ছোররা বুলেটে ১০২ জন এবং অন্যান্য ৩০ জন। আহতদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৯৪ জন। এদের মধ্যে ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন ১০ জন ও ক্লিনিকে আটজন। আহতদের মধ্যে গুরুতর চোখের চিকিৎসা দরকার ১৩ জনের এবং বুলেটে আঘাতপ্রাপ্ত গুরুতরদের চিকিৎসা দরকার এমন মানুষের সংখ্যা ৩৪ জন।

আয়োজকরা জানান, উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুরুতর আহত ৮৩ জনের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। এছাড়া ১৫৭ জনের আর্থিক সহায়তাসহ ৬৪ জনের জীবিকা নির্বাহের সহযোগিতা প্রয়োজন। তালিকার ২২৬ জনের মধ্যে ১৬৪ জনই এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সহায়তা পাননি। বেসরকারি সহযোগিতা পেয়েছেন মাত্র ৩৩ জন।

চব্বিশের উত্তরার মুখপাত্র শরীফ-উল-আনোয়ার যুগান্তরকে বলেন, উত্তরায় ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে অংশ নিয়ে যারা হতাহত হয়েছেন আমরা তাদের নাম-পরিচয় সংগ্রহ করছি। এ কাজে উত্তরার বিভিন্ন হাসপাতাল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্যাম্প করে আমরা তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছি।

তিনি বলেন, এটি আমাদের একটি প্রাথমিক তালিকা। আমরা ৮৭ জন শহিদের নাম পেয়েছি। এদের মধ্যে ২৮ জনের নাম-পরিচয় নিশ্চিত করতে পেরেছি। শহিদদের পূর্ণ নামের তালিকা প্রণয়নে আমাদের ক্যাম্পেইন চলমান। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহতদের নামের তালিকা প্রকাশের আয়োজনটিতে বক্তৃতা করেন- জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, শহিদ জাবির ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন, শহিদ আব্দুল্লাহ বিন জাহিদের মা ফাতেমা-তুজ জোহরা, শহিদ রানা তালুকদারের মা রুবি বেগম প্রমুখ। 

আহতদের মধ্যে ওয়ালিউল হোসেন, আসাদুজ্জামান হৃদয়, আহত জুলফিকার আলীর ভাই জুবায়ের হোসেন, ঈশান প্রমুখ। তারা জুলাইয়ের সেই বিভীষিকাময় স্মৃতি তুলে ধরেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম