Logo
Logo
×

অন্যান্য

সম্প্রীতি সংলাপে বক্তারা

ধর্মীয় বিদ্বেষ সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রধান কারণ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫০ পিএম

ধর্মীয় বিদ্বেষ সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রধান কারণ

দেশে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টের অন্যতম প্রধান কারণ। রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে বৃদ্ধি পেয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট। দখল হয়ে যাচ্ছে তাদের জমি ও দোকানপাট। নষ্ট হচ্ছে সামাজিক সম্প্রীতি।

এমন অবস্থায় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির মুখোমুখি করতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। একইসঙ্গে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সচেতন হতে হবে এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভাতৃত্বের বন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাহলে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মধ্যে সামাজিক সম্প্রীতি গড়ে উঠবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সম্প্রীতি সংলাপে’ অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। ইউকেএইড ও দি হাঙ্গার প্রজেক্ট আয়োজনে ‘সম্প্রীতি সংলাপ’ অনুষ্ঠিত হয়।

হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মুহাম্মদ রফিক-উল ইসলাম, জেসাস কল চার্চ অব বাংলাদেশের রেভারেন্ড ডেভিড বৈদ্য, আহমদিয়া মুসলিম জামাতের ডিরেক্টর (এক্সটার্নাল এফেয়ার্স) আহমেদ তাবসির চৌধুরী, জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতির যুগ্ম সম্পাদক বিমল চন্দ্র চক্রবর্তী, রিসার্স ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অ্যাডভোকেট রুহি নাজ, দি সাউথ এশিয়া ফোরাম ফর ফ্রিডম অব রিলিজিওন অব বিলিফ’র বোর্ড মেম্বার শুভ্রদেব কর, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের রিলিজিয়াস সেক্রেটারি স্বরূপানন্দ ভিক্ষু, হাঙ্গার প্রজেক্টের ডিরেক্টর (অপারেশন্স) চার্লস রীড প্রমুখ।

ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অ্যাডভাইজার ড. শাহনাজ করীম। এ ছাড়া শিক্ষাবিদ, ধর্মীয় নেতৃত্ব, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং তরুণদের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গত ৫ আগস্ট এক অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমাদের সামনে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। এখন আমরা যদি সম্প্রীতির সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারি, সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভাতৃত্বের বন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশকে রুখে দেওয়ার সাধ্য কারো নেই। 

তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে নানান মত ও পথ থাকতে পারে। কিন্তু আমরা প্রথমত মানুষ। আমরা সবাই বাংলাদেশি, আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। আমরা পরস্পরের মধ্যে নানান বিষয়ে মতান্তর করতে পারি, কিন্তু মনান্তর যেন না করি। আমরা যদি মানুষ পরিচয়কে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে পারি, তাহলে আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়।  

সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ব্যক্তিগত ও সামাজিক বহু কারণে আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি দরকার। কিন্তু আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি কেন কমে যাচ্ছে তার কারণগুলো চিহ্নিত করা দরকার। আমি মনে করি, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টের অন্যতম প্রধান কারণ। তবে অজ্ঞতার কারণেই মূলত ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো হয়।

তিনি আরও বলেন, অনেক সময় তৃতীয় পক্ষের ষড়যন্ত্র, রাজনৈতিক কারণ, জমি, মাঠ ও দোকান দখলে ধর্মকে অপব্যবহার করা হয়। ধর্মকে ব্যবহার করে কেউ যাতে স্বার্থসিদ্ধি করতে না পারে সে ব্যাপারে রাষ্ট্রকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ বিষয়ে  জনসচেতনতা সৃষ্টি করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গুণগত পরিবর্তন এলে সামাজিক সম্প্রীতির মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। 

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ রফিক-উল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই কল্যাণময় সমাজ চাই। কিন্তু যেভাবে সাম্প্রদায়িক ঘটনা বাংলাদেশে ঘটছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এইসব হামলার পেছনের কারণ খুঁজে বের করতে হবে। বিশেষ করে সাম্প্রদায়িক হামলার পেছনে রাজনৈতিক কারণ আছে কি না- সেগুলো খতিয়ে দেখা দরকার। 

চার্লস রীড তার বক্তব্যে বলেন- জাতি, বর্ণ, ধর্ম ও বর্ণের কারণে প্রতিদিন বিশ্বব্যাপী লাখো মানুষ সহিংসতা, শত্রুতা ও বৈষম্যের শিকার হয়। এ ধরনের অন্যায় ও অন্যায্য আচরণ থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। 

অনুষ্ঠানে শীর্ষক প্রকল্পের কার্যক্রমের একটি বিবরণ তুলে ধরে ড. শাহনাজ করীম বলেন, বাংলাদেশে সম্প্রীতির সুদীর্ঘ ঐতিহ্য লালনে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তায় ‘এজেন্টস অব চেঞ্জ: এ বাংলাদেশ ফ্রিডম অব রিলিজিওন অর বিলিফ লিডারশিপ ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষক একটি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শশাঙ্ক বরণ রায়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম