Logo
Logo
×

অন্যান্য

এজাহারে নাম থাকলেই গ্রেফতার নয়: ডিএমপি কমিশনার

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪১ পিএম

এজাহারে নাম থাকলেই গ্রেফতার নয়: ডিএমপি কমিশনার

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেছেন, থানায় মামলা রেকর্ড হলেই এজাহার নামীয় আসামি ধরতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আসামি ধরা হবে তদন্ত সাপেক্ষে। এছাড়া ঢাকায় পুলিশ হত্যা, থানায় অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুটের ঘটনাগুলোতেও মামলা হবে। কারণ ‘ক্রিমিনাল ইভেন্ট কখনো তামাদি হয় না। 

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ডিএমপি সদর দপ্তরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ক্র্যাব সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যান্য সদস্য এবং ডিএমপি পদস্থ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিতি ছিলেন। মতবিনিয়কালে ডিএমপি কমিশনার ক্র্যাব নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

গণহারে মামলা ও এজাহারে সাংবাদিকদের নাম দেয়া প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এজাহারে নাম থাকলেই গ্রেপ্তার করতে হবে বিষয়টা এ রকম না। কালেকটিভ তদন্ত করে তারপর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাঠ পর্যায়ে সেভাবেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে সব মামলায় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন,  ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে পুলিশের ১৭৭টি যানবাহন ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্থাপনা ক্ষতি হয়েছে। সেসব সারিয়ে তোলার কাজ চলছে। দুই এক সপ্তাহের মধ্যে  সব থানা স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরবে। 

কমিশনার বলেন, ট্র্যাফিক ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশ এখন গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছে। ধীরে ধীরে আরো উন্নতি হবে। এ ছাড়া ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশ আরো সক্রিয় হবে। পুলিশের টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পুলিশের মনোবল চাঙ্গা করতে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন দাবি নিয়ে লোকজন রাস্তায় নেমে অবরোধ করে যানজট সৃষ্টি করছে। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা প্রধান সড়কে উঠে যাচ্ছে। পুলিশ এসব নিয়ে কাজ করছে। রাস্তা ও ফুটপাত হকারমুক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। ধীরে ধীরে পুলিশ তার স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অপরাধী গ্রেফতারে অভিযান চলছে।  অভিযান আরো জোরদার করা হবে। 

ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান বলেন, সাংবাদিক ও পুলিশ হচ্ছে একে অপরের পরিপূরক। সমাজে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাই আমাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, আমি এক ক্রান্তিকালে ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী, সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন সংস্থা ও নগরবাসীর সহযোগিতায় বর্তমান অবস্থায় উপনীত হতে পেরেছি। তিনি আরো বলেন, অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশের অন্যতম পূর্বশর্ত। বর্তমান পরিস্থিতিতে পুলিশের মনোবল বৃদ্ধি এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাসমূহ দ্রুত সংস্কার করে নগরবাসীকে সর্বোচ্চ পুলিশি সেবা প্রদানের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, জনগণ হল একটা শক্তি, সে শক্তির সাথে পুলিশের উপস্থিতি যুক্ত হলে যে কোন অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাজপথে শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য পুলিশ রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন করতে হবে। ক্র্যাবের উদ্দেশে তিনি বলেন, পুলিশ আইন ও বিধি অনুযায়ী কাজ করে। অপরদিকে সাংবাদিকগণ তাদের লেখনীর মাধ্যমে সমাজকে অপরাধমুক্ত করতে পুলিশকে সহযোগিতা করেন। এভাবে পুলিশ ও সাংবাদিক মিলে কাজ করলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্থানে যেতে পারব। আমরা সম্মানিত মহানগরবাসীর জন্য ভালো কিছু করতে চাই। আপনারা আমাদের ভালো কাজ দেখলে প্রশংসা করবেন আর আমাদের কাজ করতে গিয়ে কোথাও কোন ভুলত্রুটি হলে তা তুলে ধরবেন। তবে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে কোনো আপস করা যাবে না। এ ধরনের সংবাদ পুলিশের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং উৎকর্ষতাকে অধিকতর শানিত করতে সহায়তা করে।

মতবিনিময় সভায় ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান বলেন, ডিএমপির সাথে ক্র্যাবের বন্ধন অনেক পুরোনো। যেকোনো প্রয়োজনে আমরা আপনাদের সহযোগিতা পেয়ে থাকি। পুলিশের অনুপস্থিতিতে অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশকে আরো বেশি দৃশ্যমান হতে হবে। জনগণের আস্থা ফেরাতে ঢাকা মহানগর এলাকায় পূর্বের ন্যায় ওপেন হাউজ ডে, বিট পুলিশিং, কমিউনিটি পুলিশিং, পুলিশি টহল ও তৎপরতা বাড়াতে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম যাচাই বাছাই করে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার অনুরোধ করেন, যাতে নিরপরাধ কেউ অহেতুক হয়রানির শিকার না হয়। তিনি বলেন, ঢালাওভাবে সাংবাদিকদের নামে হত্যা মামলা হচ্ছে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার আগে অবশ্যই যাচাই করে নেওয়া উচিত।

মতবিনিময় সভায় ডিএমপির অ্যাডিশনাল পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদ, অ্যাডিশনাল পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ইসরাইল হাওলাদার, অ্যাডিশনাল পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী; অ্যাডিশনাল পুলিশ কমিশনার (ট্র্যাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান এবং যুগ্ম কমিশনার ও উপ-পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম