রাষ্ট্রপতির দপ্তরে ইসির চিঠি
এনআইডি স্বরাষ্ট্রে নেওয়ার সিদ্ধান্ত আইনবহির্ভূত
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১০ পিএম
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সিদ্ধান্ত ‘আইনবহির্ভূত’ ছিল। ওই সরকারের প্রণীত জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩ বাতিল এবং এনআইডি নিজেদের হাতে রাখার জন্য রাষ্ট্রপতির দপ্তরে আধা সরকারিপত্র (ডিও লেটার) দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসি সচিব শফিউল আজিম সই করা ওই ডিও লেটার মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি দপ্তরের জন বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনির কাছে পাঠিয়েছে ইসি সচিবালয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হলে ভোটার তালিকার তথ্য ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের অমিলের কারণে ভোট দেওয়া বাধাগ্রস্ত হবে এবং নির্বাচন পরিচালনায় বিঘ্ন ঘটবে। এছাড়া তথ্যভান্ডারের শুদ্ধতা বিনষ্ট হওয়ার শঙ্কা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি নাগরিকদের তথ্যের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের হাতে রাখার যুক্তি তুলে ধরে বলা হয়েছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নাগরিকদের তথ্য সংরক্ষিত থাকায় তথ্য বিকৃতিসহ তথ্যের অপব্যবহারের সুযোগ কম। বর্তমানে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে বাংলাদেশি নাগরিকদের পাসপোর্টসংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একই প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এনআইডি কার্যক্রম পরিচালনা করা হলে ডাটাবেজ কারসাজি করার আশঙ্কা দেখা দেবে এবং বিদ্যমান চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স নষ্ট হবে।
এনআইডি ডাটাবেজ তৈরিতে ইসির কৃতিত্ব উলেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে নাগরিকদের যে সব ডাটাবেজ তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে একমাত্র ভোটার তথা এনআইডি ডাটাবেজ ছাড়া অন্য কোনো ডাটাবেজ শতভাগ আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। যে কারণে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান নাগরিকদের পরিচিতি নিশ্চিতকরণে ডাটাবেজ ও নাগরিক সেবার ওপর আস্থাশীল, যা নির্বাচন কমিশনের এক অনন্য অর্জন। জাতীয় স্বার্থে অমূল্য এ তথ্যভান্ডারকে সুসংহত রেখে অব্যাহত নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগে নেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে অনুরোধ জানানো হয় ওই চিঠিতে।