মেধার ভিত্তিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের দাবি

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৮ পিএম

ফাইল ছবি
মেধার ভিত্তিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী চাকুরি প্রত্যাশী আন্দোলন। এ সময় তারা ২ দফা দাবি জানান।
সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ওই দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন, সংগঠনের আহ্বায়ক কাজল চন্দ্র রায়, সমন্বয় আশরাফ উদ্দিন রমিজ আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, প্রথমেই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি জুলাই গণ গণঅভ্যুত্থানের সকল শহিদকে, যাদের আত্মত্যাগে আমরা একটি বৈষম্যহীন, স্বৈরাচারমুক্ত স্বপ্নের রাষ্ট্র পেতে চলেছি। গত ২৯ মার্চ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) এর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় আমরা ৪৬,১৯৯ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হই। গত ৯মে থেকে ১২ জুন পর্যন্ত ৪৬,১৯৯ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। মৌখিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার প্রায় ৩মাস সময় অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ অনুসারে উক্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে মহিলা ৬০ শতাংশ, পোষ্য ২০ শতাংশ ও পুরুষ ২০ শতাংশ ধার্য রয়েছে যা মেধার চূড়ান্ত অবমাননা বলে আমরা মনে করি।
তারা বলেন, যেহেতু চলতি বছরের ২৩শে জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটা সংক্রান্ত পূর্বের সব প্রজ্ঞাপন রহিত করা হয়েছে, তাই প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগে ৯৩% মেধা ও ৭% কোটা অনুসরণ করতে আইনগত কোনো জটিলতা থাকার কথা নয়। তাই উক্ত নিয়োগের ফলাফল প্রণয়নের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কর্তৃক জারিকৃত কোটা সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসারে ৯৩% মেধা ও ৭% কোটা অনুসরণের দাবিতে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে ৩দিন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছি।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আহবান করেছিলেন আন্দোলনের পরিবর্তে লিখিতভাবে নিজেদের দাবি জানাতে। প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শ অনুযায়ী মানববন্ধন কিংবা আন্দোলনের পরিবর্তে আমরা মেধাভিত্তিক নিয়োগের দাবি জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
তারা আরো বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন জারির আগে অনুষ্ঠিত কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ও প্রকাশিতব্য রয়েছে যেগুলোতে সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করা হয়েছে অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ মেধা ও ৭ শতাংশ কোটা অনুসরণ করা হয়েছে। এমন অবস্থায় বলতে চাই যে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের রক্তের ওপর দিয়ে এই কোটা প্রথা কোনোভাবেই বহাল থাকতে পারে না। কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে এত প্রাণহানির পর কোনো অবস্থাতেই প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ এ উল্লিখিত কোটা বহাল থাকতে পারে না। কোটা বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মেধাবীদের নিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য আমরা দুই দফা দাবি পেশ করছি যা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়কে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে পূরণ করতে হবে।
২ দফা দাবি হলো- প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ বাতিলপূর্বক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত কোটা সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুসারে ৯৩% মেধা ও ৭% কোটার ভিত্তিতে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) এর চূড়ান্ত ফলাফল দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। ৩১ জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত শুন্যপদসমূহের বিপরীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।