সালমানের বেক্সিমকোর অর্থ পাচার অনুসন্ধানে সিআইডি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকোর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) আজাদ রহমান জানিয়েছেন, বেক্সিমকো গ্রুপ এবং এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচরের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। গত ১৫ বছরে ৭টি ব্যাংক থেকে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ৩৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করেছে গ্রুপটি। বেক্সিমকো গ্রুপের ১৮টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করে রপ্তানি মূল্য ফিরিয়ে না এনে ট্রেড বেইজড মানি লন্ডারিং করে ১৩৫ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছে।
সিআইডি জানায়, জনতা ব্যাংক থেকে ২১ হাজার ৬৮১ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংক থেকে ৫২১৮ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ২৯৫ কোটি, সোনালী, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক থেকে ৫ হাজার ৬৭১ কোটি ও এবি ব্যাংক থেকে ৬০৫ কোটি টাকাসহ মোট ৩৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ।
সিআইডি জানায়, সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে গ্রহণ করে বিদেশে পাচার করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও গত ৩ বছরে দৃশ্যমানভাবে বাজার থেকে ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা নিয়েছে এবং অদৃশ্যভাবে ২০ হাজার কোটি টাকা প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সালমান এফ রহমান ও তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করায় মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত বিস্তারিত অনুসন্ধানের মাধ্যমে মামলা করার কার্যক্রম চলমান আছে। যে কোনো সময় মামলা করা হবে।
সিআইডি জানতে পারে, সালমান এফ রহমান ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্টরা অর্থ পাচার করে দুবাই, সিঙ্গাপুর, ইউকেসহ বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগ ও ফ্ল্যাট ক্রয় করেছে। তার ছেলে সায়াম ফজলুর রহমানের নামে সৌদি আরবে একটি বৃহৎ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি করেছে। অথচ বিদেশে ওষুধ কোম্পানি করে দেশের শিল্পের বিকাশে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।
সিআইডি জানায়, বেক্সিমকো গ্রুপের ১৮টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করে রপ্তানি মূল্য ফিরিয়ে না এনে ট্রেড বেইজড মানি লন্ডারিং করে ১৩৫ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। সৌদি আরবের দাম্মাম, দুবাইয়ের কাছাকাছি সৌদিতে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালে যৌথ বিনিয়োগের বেশিরভাগ অর্থই বাংলাদেশের। সেখানে প্রায় ৩০ ধরনের ওষুধ তৈরি করার কথা।
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বাংলাদেশ নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে পৃথিবীর ১৬০টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ডলারের ওষুধ রপ্তানি হয়েছে।